প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্ব-উদ্যোগে কৃষি কাজের সেচ সুবিধার্থে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে “টেকসই ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন” প্রকল্পের মাধ্যমে বরিশালে দুইটি খাল পূনঃখনন করা হয়েছে।
ফলে দীর্ঘ ৩০ বছর পর জেলার গৌরনদী উপজেলার প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের দুইটি মরা খালে এখন যৌবণ ফিরে এসেছে। পাশাপাশি জেলার তিনটি উপজেলার প্রায় সাড়ে চার হাজার কৃষকদের মাঝে ফিরেছে স্বস্তি। একইসাথে খনন করা মাটি দিয়েই খালের দুইপাশে নির্মিত হয়েছে সু-বিশাল রাস্তা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মাধ্যমে গৌরনদী উপজেলার হোসনাবাদ ড্রেনেজ এ- ইরিগেশন নামের একটি উপ-প্রকল্প গ্রহন করে হোসনাবাদ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিডেট। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার গৌরনদী, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলার সীমান্তবর্তী সরিকল ইউনিয়নের আড়িয়াল খাঁ নদীর শাখা মিয়ারচর খাল ও কুড়িরচর গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া মরা খালের প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পূনঃখনন করা হয়। খাল দুইটি খনন হওয়ায় গৌরনদী উপজেলার সরিকল, হোসনাবাদ, মিয়ারচর, কুড়িরচর, নলগোড়াসহ বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নের জাহাপুর এবং সীমান্তবর্তী মুলাদী উপজেলার কয়েক হাজার কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
সরেজমিনে ওই এলাকার একাধিক কৃষক ও খাল পাড়ের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, খাল দুইটি দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত মরা ছিলো। ফলে বোরো মৌসুমসহ রবি শষ্য চাষাবাদের জন্য প্রতিবছর কৃষকদের বৃষ্টির পানির জন্য অপেক্ষা করতে হতো। এতে অধিকাংশ কৃষিজমি অনাবাদি পরে থাকতো। নদীর সাথে খালের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বন্যা কিংবা অতিবৃষ্টি হলে পানি নিস্কাশন হতোনা। দীর্ঘবছর পরে হলেও খাল দুইটি খনন করায় এলাকার কৃষকরা এখন সোনালী স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন।
হোসনাবাদ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিডেটের সভাপতি সোহরাব হোসেন জমাদ্দার বলেন, খালের পানি ব্যবহার করে চরাঞ্চলের কৃষকরা বোরো মৌসুমে ধান চাষাবাদের পাশাপাশি রবিশষ্য এবং বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি আবাদ করতে পারবেন। এছাড়াও খাল খননের ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, এ খাল খনন করায় প্রায় সাড়ে চার হাজারের অধিক মানুষ উপকৃত হয়েছেন।
এ বিষয়ে এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ অহিদুর রহমান বলেন, সমিতির সদস্যরা খাল খননের জন্য রেজুলেশন তৈরী করে জমা দেয়ার পর সেটি নির্বাহী প্রকৌশলীর বরাবরে দাখিল করা হয়। যার প্রেক্ষিতে বরাদ্দ দেয়ায় খালটি পূনঃখনন করা হয়েছে। একইসাথে খনন করা মাটি দিয়েই খালের দুইপাশে নির্মিত হয়েছে সু-বিশাল রাস্তা। যেকারণে আগামীতে ওই এলাকার কৃষির প্রসার ঘটবে। পাশাপাশি দেশীয় মাছ বৃদ্ধি ও হাঁস পালনসহ অন্যান্য সুযোগ তৈরি হবে। এতে করে ওই এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে। তিনি আরও বলেন, অতিসম্প্রতি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খাল পূনঃখনন কাজ পরিদর্শন করে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।