ফরিদপুরের শিবরামপুর রেলস্টেশনে পাথরশেডের দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি জনি সহ কমপক্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশ।
রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে পৌছে আহতদের উদ্ধার করে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পুলিশ তিনজনকে আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, শিবরামপুর রেলস্টেশনে রেলযোগে ভারত থেকে পাথর আনলোড করা হয়। এরপর ওই পাথর সেখান থেকে দশ চাকার ট্রাকে লোড করে বিভিন্নস্থানে বিক্রি করা হয়। এই পাথর লোড-আনলোড নিয়ে সেখানে মোটা অংকের চাঁদাবাজির টাকা লেনদেন হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুনে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে বরকত-রুবেলের পতনের পর শিবরামপুর রেলস্টেশনে পাথর লোড-আনলোডের অবৈধ চাঁদাবাজির হাতবদল হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিবরামপুর রেলস্টেশনের পাথর লোড-আনলোডের চাঁদাবাজি প্রভাবশালীদের পক্ষে বিএনপি সমর্থিত স্থানীয় রাকিবুল ইসলাম সাদ্দাম (৩২) ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আলাউদ্দিন মোল্যা (৪০) নামে দুই ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুর ১২টার দিকে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলাম জনির নেতৃত্বে প্রায় অর্ধ শতাধিকের একটি দল শিবরামপুর রেলস্টেশনে পাথর শেডের দখল নিতে যায়। এ সময় সাদ্দাম ও আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে সমসংখ্যক একটি দল তাদের প্রতিহত করতে নামে। এ সময় জনি সহ তার পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে পৌছে আহতাবস্থায় জনি সহ তার পক্ষের কোতোয়ালি থানা কৃষক লীগের সদস্য সচিব মোরশেদ আলী প্রিন্স (৪৫), রানা সর্দার (৪০) ও আছিরুদ্দিন (৪৫) নামে চারজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আ. জলিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একদলকে হটিয়ে অপর দল পাথর শেডের দখল নিতে গেলে সেখানে তাদের উপর এ হামলা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ আহত চারজনকে আটক করে নিয়ে আসে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, আটক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জনির কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল পাওয়া গেছে। তবে তিনি দাবি করেছেন উদ্ধার হওয়া পিস্তলের লাইসেন্স রয়েছে।
তিনি বলেন লাইসেন্স থাকলেও সব জায়গায় অস্ত্র দেখানো নিষেধ রয়েছে। আর এ কারণে আমরা তার লাইসেন্সটি বাতিল চেয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক বরাবর লিখব। তিনি আরও বলেন এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উল্লেখ্য গত বেশ কয়েক মাস যাবত পাথর শেটটি দখলে নিতে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে সরাতে মাঠে নামে। বর্তমানে আওয়ামী রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে হঠাৎ করে শেটটি দখলে নিতে ও দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে উভয় পক্ষ।