পরিবারে অভাবের অযুহাত দিয়ে সদ্য ভুমিষ্ট হওয়া নবজাতক ছেলেকে অর্থের বিনিময়ে বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে অন্যত্র বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগেও ওই দম্পত্তি তাদের আরেকটি সন্তান বিক্রি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের টেমার গ্রামের।
তবে সোমবার সকালে ওই নবজাতকের বাবা ও মা তাদের সন্তান বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তারা তাদের সন্তানকে দত্তক দিয়েছেন। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের হতদরিদ্র তিন সন্তানের জনক সুধাংশ বাড়ৈ অভাবের সংসারে সন্তানের ভরণ-পোষণের অর্থ জোগান দিতে না পারার কারনেই পরপর দুটি ছেলে অর্থের বিনিময়ে অন্যত্র বিক্রি করেছেন।
সুধাংশ বাড়ৈ (৬৭) বলেন, প্রথম স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায় আমি একটি ছেলে দত্তক নিয়েছিলাম। পরে প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর আটবছর পূর্বে একই উপজেলার কাঠিরা গ্রামের কল্পনা ঢাকীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করি। তার গর্ভে পরপর দুটি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহন করে।
তিনি আরও জানান, তিন ছেলে ও স্বামী-স্ত্রী সংসারে অভাবের কারণে সংসার চালাতে তিনি হিমশিম খাচ্ছিলেন। এরইমধ্যে গত বছর কল্পনার গর্ভে আবারও একটি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সেই সন্তানের ভরণ পোষণের অর্থ জোগান দিতে না পারায় একজনের কাছে তাদের ছেলেকে দত্তক দিয়েছেন। সর্বশেষ গত ৩ জুন তার স্ত্রী আবারও পঞ্চম ছেলে সন্তানের মা হয়। পরে তার স্ত্রীর এক নিকট আত্মীয় নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে তার সদ্য জন্মগ্রহণ করা ছেলেকে দত্তক দেয়া হয়েছে।
অর্থের বিনিময়ে সন্তান বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে সুধাংশ বাড়ৈর স্ত্রী কল্পনা ঢাকী বলেন, সন্তানকে যে দুধ কিনে খাওয়াবো সেই সামর্থ্যও আমাদের নেই। সদ্য সন্তান জন্ম নেওয়া ছেলের জন্য একদিকে আমার যেমন আনন্দ, ঠিক তেমনি আবার বেদনারও। শিশু জন্ম দেয়ার পরেও শুধুমাত্র অভাবের তাড়নায় নিজের সন্তানকে অন্যের কাছে দত্তক দিতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অভাবের তাড়নায় একটি মানুষ তার নিজের সন্তানদের অন্যের কাছে দত্তক দিয়ে দেন। বিষয়টি সত্যি হৃদয় বিদারক। ওই পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে আমার সাধ্যমত তাদের সহযোগিতা করা হবে।