প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি হতাশাব্যঞ্জক। কারণ মূল্যাস্ফীতি ও মাথা পিছু আয়ের হিসাবে সিগারেটের প্রকৃত মূল্য কমে গেছে। গত রোববার ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টর আয়োজিত ‘২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে তামাক কর : প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকাণ্ড৬ আসনের সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক, অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি শারমিন রিনভী এবং ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপপরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এবারের বাজেটে নিম্নস্তরের প্রতি শলাকা সিগারেটের মূল্য বাড়ানো হয়েছে মাত্র ১০ পয়সা করে। এটি আসলে শুভংকরের ফাঁকি। দেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড তামাকজাত দ্রব্যের কর কাঠামো ঠিক করে। এটি আসলে করা উচিত ট্যারিফ কমিশনের। আর রাজস্ব বোর্ডের হাতে থাকা উচিত রাজস্ব আদায়। এটা করতে পারলে তামাকজাত দ্রব্যের কর কাঠামো ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। শারমিন রিনভী বলেন, ‘নিম্ন আয়ের মানুষদের সিগারেট থেকে দূরে রাখতে দাম এমনভাবে বাড়াতে হবে, যাতে সিগারেট তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। অথচ তেমনটি আমরা বাজেটে দেখি না।’ সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ নিম্নস্তরের সিগারেট বেশি গ্রহণ করে। অথচ বাজেটে নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য সেভাবে বাড়েনি। এতে করে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে। সস্তা সিগারেটের ব্যবহারও বাড়বে। এ ছাড়া নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে জর্দা-গুলকেও ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে।’ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বছর এনবিআরকে অতিরিক্ত যে ৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে সেটি তারা তামাক কর বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্জন করতে পারত। কিন্তু এনবিআর সে সুযোগ গ্রহণ করেনি। এজন্য ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে তামাকজাত দ্রব্যের কর বৃদ্ধির ব্যাপারে উদ্যোগী করতে হবে।