আবহাওয়া অফিস না থাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শেরপুর জেলার মানুষ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। ভারত সীমান্তঘেঁষা শেরপুর জেলার আয়তন ১,৩৬৩.৭৬ বর্গকিলোমিটার। দেশের কৃষি উর্বর ও খাদ্য সমৃদ্ধ জেলার মধ্যে শেরপুর অন্যতম। গারো পাহাড়ে ঘেরা এই জেলায় এখনও নির্মাণ হয়নি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত নির্ণয় তো দূরের কথা, তাপমাত্রা, বৃষ্টি পরিমাপ, বাতাসের গতিবেগ নির্ণয়েরও নেই কোনো সুব্যবস্থা। ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এই জনপদের মানুষ। তাই দ্রুত এই জেলায় আবহাওয়া অফিস স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষক, সুশীল সমাজ ও পরিবেশবিদরা।
বজ্রপাত ও বন্যার ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত শেরপুরে আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কোনো অফিস না থাকায় বিগত সময়ের ঘূর্ণিঝড়, অনাবৃষ্টি আর অতিবৃষ্টির ক্ষতির প্রভাবটা পড়েছে গোটা জেলার জনসাধারণের ওপর।
শেরপুর সদরের চরশেরপুর ইউনিয়নের কৃষক আবদুল জলিল মিয়া বলেন, মেঘ-বৃষ্টি আর ঝড় তুফানের আগাম খবর পেলে আমরা আগেভাগেই সতর্ক হতে পারতাম। এতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি কম হতো। গ্রীন ফাইটিং মুভমেন্টের আহ্বায়ক নাবিল আহম্মেদ বলেন, ঋতুবৈচিত্রের খামখেয়ালিপনায় আবহাওয়া বদলে গেছে অনেকটাই। বর্ষায় অনাবৃষ্টি কখনও অতিবৃষ্টি, গ্রীষ্মের দাবদাহ, শীতে আবার গরম এখন অনেকটাই নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। বর্তমান আবহাওয়ার অবস্থা দেখা, আকাশে বায়ু এবং মেঘের গতিবিধি ট্র্যাক করা, বর্তমান আবহাওয়ার অনুরূপ পূর্ববর্তী আবহাওয়ার নিদর্শন খুঁজে পাওয়া, বায়ুর চাপের পরিবর্তন পরীক্ষা করা- এসবের জন্য প্রয়োজন আবহাওয়া অফিস। বিষয়টি দ্রুত সরকারের নজরে এনে শেরপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ আবহাওয়া অফিস অথবা রাডার স্টেশন স্থাপন করার দাবি এই পরিবেশবীদের।
পরিবেবশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের আহ্বায়ক মেরাজ উদ্দিন বলেন, শেরপুরে আবহাওয়া অফিস না থাকার কারণে, সময়মতো সঠিক বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছায় না। রাজধানীর সঙ্গে মিলিয়ে নিলেও অনেক সময় দুর্যোগ সংকেত পাল্টে যায়। ফলে আবহাওয়ার সংক্রান্ত সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না এই জেলার মানুষ। এতে সবচেয়ে
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঝড় তুফানের আগাম বার্তা পেলে ফসল রক্ষায় তারা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে পারবেন। তাই কৃষি উর্বর এই জেলায় আবহাওয়া অফিস স্থাপন করা প্রয়োজন।