ক্রেতাদের নতুন ডিভাইস কিনতে উদ্বুদ্ধ করতে অ্যাইফোন নির্মাতা অ্যাপল ইচ্ছে করেই পুরনো ডিভাইসের গতি কমিয়ে দিচ্ছিল- এমন অভিযোগ তুলেছেন এক ব্রিটিশ নাগরিক। যুক্তরাজ্যের আড়াই কোটি আইফোন ব্যবহারকারীর জন্য ৭৬ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন জাস্টিন গাটম্যান। অ্যাপল ইচ্ছে করে পুরনো আইফোনের ব্যাটারির গতি কমিয়ে দিচ্ছে- এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে যুক্তরাজ্যের আইফোন ব্যবহারকারীদের সিংহভাগ বড় অংকের ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। জাস্টিন গাটম্যানের অভিযোগ, নতুন একটি সফটওয়্যার আপডেট ইনস্টল করলে ফোনের পারফর্মেন্স আরও বাড়বে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল অ্যাপল। কিন্তু ওই আপডেট আদতে পারফর্মেন্স না বাড়িয়ে ফোনের গতি আরও কমিয়ে দিচ্ছিল। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাপলের দাবি, তারা ‘কখনোই’ ইচ্ছে করে নিজস্ব ডিভাইসের জীবনকাল কমায়নি। যুক্তরাজ্যের ‘কম্পিটিশন আপিল ট্রাইবুনাল’-এর কাছে দায়ের করা নথিতে গাটম্যান অভিযোগ করেছেন, অ্যাপল ‘থ্রটলিং’ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে পুরনো আইফোনের গতি কমিয়ে দেয় যেন পণ্য ফেরত নেওয়ার বা মেরামতের খরচ এড়িয়ে যেতে পারে ব্যবহারকারীরা। বিবিসি জানিয়েছে, গাটম্যানের অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে আইফোনের জন্য প্রকাশিত একটি সফটওয়্যার আপডেটে থাকা পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট টুল। ওই আপডেট ডিভাইসের বিদ্যুৎ খরচ নিয়ে জটিলতা এবং হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যাগুলোর সমাধান করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল অ্যাপল। গাটম্যান বলছেন, সফটওয়্যার আপডেটের ডাউনলোড বিবরণীতে পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট টুল নিয়ে কোনো তথ্য উল্লেখ ছিল না এবং টুলটি ডিভাইসের গতি কমিয়ে দেবে, সে বিষয়টি ব্যবহাকারীদের স্পষ্টভাবে জানাতে ব্যর্থ হয়েছে অ্যাপল। পুরনো আইফোনের ব্যাটারি নতুন আইওএস সফটওয়্যারের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে না- এ বিষয়টি লুকাতেই অ্যাপল ওই টুলটি চালু করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। গাটম্যানের দাবি, “সম্মানজনক এবং বৈধ পদক্ষেপ হিসেবে ক্রেতাদের বিনা খরচে ব্যাটারি প্রতিস্থাপনের সেবা না দিয়ে, মেরামতের সেবা অথবা ক্ষতিপূরণ না দিয়ে, অ্যাপল উল্টো সফটওয়্যার আপডেটে টুলটি লুকিয়ে রেখে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে। এতে ডিভাইসের গতি কমে গিয়েছিল ৫৮ শতাংশ।” আইফোন ৬, ৬ প্লাস, ৬ এস, ৬এস প্লাস, এসই, ৭, ৭ প্লাস, ৮, ৮ প্লাস এবং আইফোন এক্স মডেলগুলো গাটম্যানের অভিযোগের অন্তর্ভুক্ত বলে জানিয়েছে বিবিসি। নতুন এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাপল এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা কখনোই ইচ্ছে করে অ্যাপল পণ্যের জীবন কাল কমানোর জন্য কিছু করিনি অথবা ব্যবহার অভিজ্ঞতার মান কমিয়ে ক্রেতাদের আপগ্রেডে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করিনি এবং ভবিষ্যতেও করবো না।” “সবসময়ই আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন পণ্য নির্মাণ যা ক্রেতারা ভালোবাসবেন এবং আইফোনগুলো যেন যতো দিন সম্ভব টিকে থাকে সেটি নিশ্চিত করা তারই অংশ,”-- যোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।