রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে প্রতিপক্ষের দফায় দফায় হামলায় ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি এলাকাছাড়া হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একাধিক মামলা হলেও পুলিশ নীরব থাকায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলেও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
স্থানীয় প্রশাসন ও এমপির সরাণাপন্ন হয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে নিজেদের বাঁচাতে শুক্রবার (১৭ জুন) বিকেল ৪টায় নগরীর এক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন কৃষকলীগ নেতার ছেলে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান।
তিনি গোদাগাড়ীর পাকড়ী ইউনিয়নের কৃষকলীগের সভাপতি ও মোসড়াপাড়া এলাকার আজাহার আলীর ছেলে। আর অভিযুক্তরা হলেন, ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন, একই এলাকার নাজিমুদ্দিনের ছেলে ও ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল, সোলাইমানের ছেলে কামাল ও আনারুল।
সংবাদ সম্মেলনে আতিকুর রহমান বলেন, এলাকার মানিক মিয়া ওয়াকফ এস্টেটের ৫১ বিঘা জমি লিজ নেন আমার বাবা। পরে স্থানীয় বিএনপির লোকজন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করলে চেয়ারম্যান নিজেই জমিগুলো নিতে চান। পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং ১৪৪ ধারা জারি করেন আদালত।
আতিকুরের ভাষ্য, চেয়ারম্যানের নির্দেশে জমিতে কাজ করতে থাকা কৃষকদের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে আদালতে মামলা করা হয়।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতারা এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরী ফেলেছেন তারা লাঠিতে জোর। আমরা দুর্বল হওয়ায় তাদের সাথে পেরে উঠতে পারছি না। তারা নানান কায়দায় আমাদের উপর একের পর এক হামলা অব্যাহত আছে। আমাদের যাকেই পাচ্ছে তাকেই মারধর বা মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে।
এরই সূত্র ধরে, জমিজামা নিয়ে আমার ভগ্নিপতি পল্লিচিকিৎসক ও ইউপি সদস্য মফিজুল ইসলামের সাথে কোন বিরোধ না থাকলেও প্রতিহিংসা মূলক ভাবে গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাতে তার চেম্বার থেকে বাড়ী ফিরছিলেন। ওই সময় তারা ওঁৎ পেথে থেকে রাতের আধাঁরে বিএনপি নেতা জালালের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়। এতে সে রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পড়ে। নিজে মারা গেছে এমন ভঙ্গিতে মাটিতে লোটাপাটি করতে থাকলে তারা সেখান হতে চলে যায়। পরে পরিবারের লোকজন ব স্থানীয়রা জানতে পেরে উদ্ধার করে। বর্তমান সে রামেক হাসপাতালের ৩১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছে। তার হাত ও পায়ের ৪ জায়গা ভেঙ্গে গেছে বলে জানান। তাকে মারধরের কারণ হিসেবে বলেন, মফিজুল ইসলাম গত ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে বিএনপি নেতা জালালকে পরাজিত করে জয়ী হন। এতে ক্ষিপ্ত হয় বিএনপির লোকজন। এরই সুযোগে তাকে মারধর করে আতঙ্ক ছড়াতে এমন কাজ করছেন বলে তিনি দাবি করেন। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে আতিকুরের পিতা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি আজাহার আলী বলেন, দফায় দফায় হামলা চালনো হয়েছে আমার বাসায়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দাপটে নিজের এলাকায় ঢুকতে পারছি না। তারা র্যাব পরিচয়েও আমাকে ফোন করে হুমকি দিয়েছে। এসব ঘটনায় নিরাপত্তা নিশ্চিতপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মো. জালাল হোসেন বলেন, হামলার প্রশ্নই আসে না। সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
পাকড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বরেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করার চেষ্টা করছি। এ ব্যপারে গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, গত মঙ্গলবার একটি হামলার অভিযোগে শুকবার (১৭ জুন) সন্ধ্যার দিকে থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।