নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভেজাল দইয়ের ব্যবসা বেশ জমে ওঠেছে। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বার বার ওই ভেজাল দই ব্যবসায়িদের জরিমানা করা হলেও বন্ধ হয় না তাদের ব্যবসা। কেউ কেউ ভ্রাম্যমান আদালতের জেল জরিমানা থেকে রক্ষা পেতে তাদের ব্যবসার ধরণ ও স্থান পরিবর্তন করেন।
জানা যায় সৈয়দপুরের অদুরে চৌমহনী বাজারের পাশে গড়ে তোলা হয় দই কারখানা। মালিক থাকেন বগুড়ায়। এখানে রয়েছে ম্যানেজারসহ বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষ কর্মচারী। এরা দিনের বেলায় ঘুমায় আর সারারাত ধরে তৈরী করে দই।
দই তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সাদা রং,স্যাকারিন,আটা,পাউডার দুধ,চিনি,নিম্নমানের চর্বি, ঠান্ডা বরফ ও তেল। অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে তৈরী করা হয়ে থাকে দই। পরবর্তীতে ওই দই রাখা হয় মাটির তৈরী বাটি বা পাত্রে। আবার কখনো রাখা হয় প্লাস্টিকের ছোট বড় পাত্রে। কেউ কেউ বাটির মধ্যে নাম ঠিকানা ব্যবহার করছে ঢাকা,বগুড়া ও নাটোর। আবার কেউ কেউ নাম দিয়ে থাকে ঢাকা বাংলাদেশ।
বাটি ভেদে দাম হাকা হয়। ছোট বাটি ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা। মাঝারী বাটি ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা। আবার বড় বাটির দাম ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা।
শহরের ওয়াপদা এলাকায় দইয়ের কারখানা। এটির অবস্থা একই। গোলাহাট, নয়াবাজার,ইসলামবাগ,হাতিখানা,রাবেয়া,পাশে ডাংগার হাটে তৈরী হচ্ছে দই।
ওই সকল ভেজাল দই দেয়া হচ্ছে কম দামে নামী দামি হোটেলে। আর তা আমরা খাচ্ছি ভাল মনে করে।
এদের কোন ধরনের কাগজপত্র নেই। উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর এ ব্যাপারে উদাসিন। অথচ এ বিষয়টি দেখার দায়িত্ব তার।
ক্রেতা আশরাফুল হক জানান,ভাল মন্দ বুঝি না। দই কিনে বাসায় যেয়ে খেয়ে দেখি স্বাদ নেই। পানি জমে কেমন যেন বিশ্রী মনে হয়।
বাংলাদেশ কৃষকলীগ সৈয়দপুর উপজেলা শাখার সভাপতি আবদুস সবুর আলম জানান,ওই সকল দই কারখানায় প্রশাসনের নজর দেয়া উচিৎ। তা না হলে ভেজালকারীরা আরো বেপড়োয়া হয়ে উঠবে। আর ওই সকল ভেজাল খেয়ে মানুষ নানান অসুখে ভুগবে।
সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আবদুর রহিম জানান,বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় দই তৈরীতে। যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই ভেজাল দই না খাওয়াই ভাল।
সৈয়দপুর বনিক সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলি জানান, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় এ বিষয় নিয়ে কথা হয়। সেখানে ব্যবসায়ি নেতারাও থাকেন। তারপরও খাদ্যে ভেজাল বন্ধ হয় না।