ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের পাগলা থানাধীন এলাকা থেকে মিতু আক্তার (২৩) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ঘটনাটি সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের মুখি মধ্যপাড়া গ্রামে ঘটে। সে ওই এলাকার তাঁরা মিয়ার মেয়ে ও গফরগাঁও সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের বানিজ্য শাখার শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিতু আক্তারের সাথে প্রতিবেশি মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল করিমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন সকালে মিতু আক্তার তাঁর মা শেফালী খাতুন (৫০) কে সাথে নিয়ে প্রেমিক আবদুল করিমের বাড়িতে যায়। এ সময় আবদুল করিমকে বিয়ে করার কথা বললে এতে আবদুল করিম প্রথমে প্রেমিকা মিতু আক্তারকে বুঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। পরে একপর্যায়ে আবদুল করিম ও তাঁর বাড়ির লোকজন মিতু আক্তারকে মারধর করে তাকেসহ তার মা শেফালী খাতুনকে টেনে হেঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে তাদের বাড়িতে নিয়ে রেখে আসে। এর কিছুক্ষণ পর প্রেমিকা মিতু আক্তার কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাড়ি থেকে ৮০০ গজ দূরে মুখী মধ্যপাড়া এলাকায় মফিজ উদ্দিনের পুকুর পাড়ে কড়ই গাছের উঁচু ডালে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। মিতুর লাশ কড়ই গাছের ঝুলে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন থানা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত শিক্ষার্থীর মা শেফালী খাতুন বলেন, সোমবার সকালে মেয়ে মিতু আমাকে নিয়ে প্রেমিক আবদুল করিমের বাড়িতে যায়। এ সময় আবদুল করিমকে সে বিয়ে করতে বলে। এতে করিম তাঁকে বিয়ে করবে না বলে জানালে আমার মেয়ে মিতু এতদিন প্রেম করেছো কেনো জানতে চায়। মিতুর প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এ সময় করিম ও তাঁর বাড়ির লোকজন আমাকেসহ আমার মেয়েকে মারধর করে টেনে হেঁচড়ে তাদের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। এ ঘটনা জানাজানি হলে আমার কলেজ পড়ঁ-য়া মেয়ে গোপনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে লজ্জায় আত্মহত্যা করে।
নিহতের ভাই গফরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ ফাহিম অভিযোগ করে বলেন, একই গ্রামের প্রতিবেশী মাদ্রাসার শিক্ষক আবদুল করিম বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত দুই বছর ধরে আমার বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বার বার সে বিয়ের কথা বললেও সে বিয়ে করতে গড়িমসি করে। আমি আমার বোনের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী প্রেমিক আবদুল করিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুল করিমের মোবাইলে ফোন দিলে সব সময় ফোন নাম্বারটি ব্যস্ত দেখায়। তাই তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় মশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মনি বলেন, লোক মুখে ঘটনা শুনেছি শিক্ষক আবদুল করিমের সাথে শিক্ষার্থী মিতুর সম্পর্ক ছিলো।
পাগলা থানার ওসি মোঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ ও ময়নাতদন্তের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।