দীর্ঘ ১৮ বছর পর গৃহবধুকে ধর্ষনের ঘটনার দায়ের করা মামলার রায় ঘোষনা করা হয়েছে। রংপুরের পীরগজ্ঞে স্বামীকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে গিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহসপতিবার বিকেলে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ৩ এর বিচারক এম আলী আহাম্মেদ এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলো।
মামলার বিবরনে জানা গেছে ২০০৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর তারিখে রাত ১১ টার দিকে রংপুরের পীরগজ্ঞ উপজেলার একবারপুর দক্ষিনপাড়া গ্রামের শওকত শেখের ছেলে মিলন শেখ তার স্ত্রীকে নিয়ে আত্মীয়র বাসায় দাওয়াত খেয়ে বাসায় ফেরার পথে আসামি একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদ তাদের পথরোধ করে। আসামিরা অস্ত্রের মুখে স্বামী মিলন শেখকে একটি গাছের সাথে বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে গিয়ে মাদারগজ্ঞ কলেজের পার্শ্বে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষন করে গৃহবধুকে ফেলে রেখে চলে যায়। তাদের আত্মচিৎকারে আশে পার্শ্বের লোকজন এগিয়ে এসে স্বামী ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধুর স্বামী মিলন শেখ বাদী হয়ে পীরগজ্ঞ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ইকবাল বাহার দুই আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১২জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করে। দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে মামলা চলার পর অবশেষে বৃহসপতিবার বিজ্ঞ বিচারক দুই আসামি একরামুল হক ও আবুল কালাম আজাদকে দোষি সাব্যস্ত করে ধর্ষনের অভিযোগে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- এব্ং অপহরনের অভিযোগে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার পর দুই আসামীকে পুলিশী পাহারায় কোট হাজতে নিয়ে যাওয়া হয় পরে তাদের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট এপিপি মাকজিয়া হাসান দীবা। তারা জানান দেরীতে হলেও জঘন্য ঘটনার ন্যায় বিচার পেয়েছে বিচারপ্রার্থীরা। এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অগ্রগতি হলো বলে আমরা মনে করি। অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজিবী আবদুস সালাম জানান তার মক্কেল ন্যায় বিচার পায়নি তারা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল দায়ের করবেন।