গাজীপুরের কালীগঞ্জে প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হওয়ার সংবাদ পেয়ে নাদিম (২৪) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি রোববার দুপুরে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের চুপাইর গ্রামের মালশিয়া প্রবাসী শারফুদ্দিন মোড়লের পরিত্যক্ত বাড়িতে ঘটেছে। নিহত নাদিম চুপাইর পশ্চিম পাড়া গ্রামের খোরশেদ আলম মোড়লের ছেলে। সে পেশায় একজন সিএনজি চালক। পরিবারে চার ভাই বোনের মধ্যে সে তৃতীয়। কালীগঞ্জ থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর মর্গে প্রেরণ করেছেন।
নিহতের ফুফু আমেনা আক্তার জানান, প্রায় ছয় মাস পুর্বে প্রতিবেশী ময়েজ উদ্দিনের মেয়ে নুসরাত জাহান লিতুনি পালিয়ে গিয়ে পশ্চিম পাড়ার খোরশেদ আলমের ছেলে সিএনজি ড্রাইভার নাদিম মোড়লেকে বিয়ে করে। বিয়ের পর তিন মাস তাদের সংসার ভালোই কাটছিল। পরে মেযের বাবা মা তাকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ানোর কথা বলে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে নুসরাতকে উপর্যোপরী চাপের মূখে দেড় মাস আগে নাদিমকে ডির্ভোস দেওয়ায়। এ সময় ডিভোর্স খাতায় নুসরাত জাহান নিজে স্বাক্ষর না করায় ডিভোর্স খাতায় তার পরিবর্তে খাতায় স্বাক্ষর করেন তার মা মর্মেও অভিযোগ করেন তিনি। ডির্ভোস হলেও তাদের মধ্যে সম্পর্কের কমতি ছিলনা। ছিল আগের মতই যোগাযোগ। ইতোমধ্যে নুসরাতের পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার জন্য দিন তারিখ ঠিক করে। আর এ কথা জানতে পারে নাদিম। তাই নাদিম যেন সে বিয়েতে বাধা দিতে না পারে সে জন্য মেয়ের পরিবার নাদিমকে বিভিন্ন ভাবে ভয়-ভীতি দেখাতে থাকে তাকে। শনিবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত দশটার দিকে রাতের খাবার শেষে বোনের সদ্য ভূমিষ্ট ভাগনির নাম রেখে ঘুমানোর জন্য বাড়ি থেকে বের হয় নাদিম। মেয়ের মা ও চাচা নাদিমকে হত্যা করে পরিত্যাক্ত ঘরে ঝুলিয়ে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পরে দুপুরে বাড়ির পাশে একটি পরিত্যাক্ত ডেরায় ঝুলন্ত অবস্থায় স্থাণীয়রা নাদিমকে দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানান, ছেলেটা মেয়েটাকে অনেক ভালো বাসতো। মেয়েটা চলে যাওয়ার পর থেকে সে মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার কথা শুনে সইতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছি।
কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. শামীম আহমেদ বলেন- সংবাদ পেয়ে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে পরিত্যক্ত ঘর থেকে গলায় উড়না পেচাঁনো ঝুলন্ত অবস্থায় নাদিম মোড়লের মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের প্রাথমিক সুরত হাল প্রতিবেদন তৈরী করে লাশের ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনিসুর রহমান জানান, নাদিমকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ বিষয়ে রববিার (২৬ জুন) বিকেলে কালীগঞ্জ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। যার নং ১৬(৬)২২।