কালীগঞ্জ ভেটেরিনারি চিকিৎসা না থাকায় সাধারন মানুষের গবাদি পশু চিকিৎসা করাতে মারাতœক সমস্যা হচ্ছে। এদিকে রহমত আলী কালীগঞ্জ উপজেলার বড় শিমলা গ্রামের বাসিন্দা। সকাল ৯টায় উপজেলা প্রানি সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে আসেন একটি খাসি ছাগল নিয়ে ইজি বাইকে করে। আসার সাথে সাথেই উপসহকারী প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা সুজিত কুমার পাল ছাগলটির রোগ নির্নয়ের চেষ্টা করতে থাকেন সহযোগী শহিদুল ইসলাম কে সাথে নিয়ে। রহমত আলীর ভাষ্যমতে, কোরবানির জন্য হাট থেকে কেনা ছাগলটি ঠিকমতো খাচ্ছে না, অল্প অল্প প্রসাব হচ্ছে এবং পেট ফুলে যাচ্ছে। এ কারণে পশু হাসপাতালে এনেছি চিকিৎসার জন্য। অনেকক্ষণ পর সুজিত কুমার ছাগলটির রোগ নির্নয়ে সক্ষম হলেন। ছাগলটির মূলত প্রসাবের রাস্তায় ইনফেকশন হয়ে কিছু অংশে পচন ধরেছিল। এরপর তিনি এই রোগের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিলেন। ভেটেরিনারি নার্জন না হলেও এভাবেই গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ টি রোগী দেখছেন এই কর্মকর্তা। কিন্তু কালিগঞ্জ ভেটেরিনারি হাসপাতালের জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত ভেটেরিনারি সার্জন হলেন ডা: মীনাক্ষী নাগ। বর্তমানে তিনি অ্যাটাচমেন্টে ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজে কর্মরত আছেন। শুধু তাই নয় কালীগঞ্জ উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বে¡ রয়েছেন শৈলকূপা উপজেলার প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: মামুন খান। যে কারণে কালীগঞ্জে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই দপ্তরের সেবা প্রদান কার্যক্রম একেবারে ভেঙে পড়েছে। রোগাক্রান্ত পশুর চাপ একা হাতে সামাল দেওয়া সুজিত কুমার পাল এর জন্য অত্যান্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এরপরও তিনি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সেবা প্রদানের।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন মীনাক্ষী নাগের সাথে কথা হলে তিনি জানান,কালীগঞ্জ ভেটেরিনারি হাসপাতালের জন্য আমি নিয়োগ প্রাপ্ত হলেও জেলা ভেটেরিনারি কলেজে শিক্ষক সংকটের কারণে সংযুক্তিতে আমি সেখানে ডিউটি করছি। আমার অনুপস্থিতিতে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে এটাও আমি বুঝতে পারছি। এ কারণে আমি চেষ্টা চালাচ্ছি উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে আমার পদটি শূন্য করার জন্য। শূন্যপদে পুনরায় ভেটেরিনারি সার্জন নিয়োগ প্রাপ্ত হলে কালীগঞ্জের মানুষ পশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে কাঙ্খিত সেবা পাবে বলে আশা রাখি। কালীগঞ্জ উপজেলা প্রানি সম্পদ কর্মকর্তা( অতিরিক্ত দায়িত্ব¡) ডা: মামুন খান জানান,এক সাথে দুই উপজেলায় কাজ করা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এর উপর কালীগঞ্জে ভেটেরিনারি সার্জন না থাকায় সেখানে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে এটা সত্য। কালীগঞ্জে নিয়োগ প্রাপ্ত সার্জন যেহেতু এখানে ডিউটি করেন না সেহেতু উনি যদি এখানে তার পদটি শূন্য করার ব্যবস্থা করেন তাহলে ঐ পদে পুনরায় নতুন সার্জন নিয়োগ প্রাপ্ত হবেন।তখন ভালো চিকিৎসা সেবা পাবে কালীগঞ্জের মানুষ।