গাজীপুরের কালীগঞ্জে জামালপুর ও বক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারের উপস্থিতিতে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরা দিয়াবাড়ি এলাকায় ঘটেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, রোববার (৩ জুলাই) বিকেলে উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ভাটিরা দিয়াবাড়ি এলাকায় মো. আবদুর রহিম ও নাজমুন নাহার দম্পতির স্থাণীয় ভাটিরা মহিলা মাদ্রাসার (দশম শ্রেণীতে) পড়ুয়া নাবালিকা (১৬) এর সাথে জামালপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলাম ও জাহানারা বেগম এর ছেলে মো. নুরে আলম (৩০) এর সাথে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগদান করেন জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. নাজমুল হাসান ও চেয়ারম্যান মো. খায়রুল আলম ও বক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. খলিলুর রহমান ও সংরক্ষিত নারী সদস্য আছমা বেগম। অন্যদিকে বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার সংবাদ পেয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কো-অর্র্ডিনেটর মো. কামাল হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এবং মো. কামাল হোসেন মেয়ের অভিভাবকের নিকট মেয়ের বিবাহের বয়স প্রমানের জন্য তার জন্ম নিবন্ধন চান। এ সময় তারা জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার কথা বলে তাকে বাড়ির ছাদে বসায় রেখে বর ও কনেকে বাড়ির পিছন দিয়ে অন্যত্র সড়িয়ে দেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসসাদিকজামানকে অবহিত করেন। পরে তিনি সোমবার (৪ জুলাই) সকাল দশটায় উভয় পক্ষকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্যে নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খায়রুল আলম বলেন, আমি চেয়ারম্যান হিসেবে অনেকেই আমাকে দাওয়াত দেয়। আমি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ছিলাম। বিবাহের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। বিশেষ কাজে আমি চলে আসি। উপস্থিত থাকলে হয়ত জানতে পারতাম বা জন্ম নিবব্ধন দেখলে বুঝতে পারতাম মেয়ের বিবাহের বয়স হয়েছে কিনা।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কো-অর্র্ডিনেটর মো. কামাল হোসেন বলেন, বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। মেয়ের অভিভাবকের কাছে মেয়ের জন্ম নিবন্ধন চাইলে তারা আমাকে বাড়ীর ছাদে বসিয়ে রেখে অন্য দিক দিয়ে বর ও কনে বের করে দেয়। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসসাদিকজামান স্যারকে অবহিত করি। তিনি সোমবার (৪ জুলাই) সকাল দশটায় উভয় পক্ষকে স্যারের কার্যালয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্যে নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে সোমবার (৪ জুলাই) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসসাদিকজামান জানান, মেয়ের ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ না দেয়ার শর্তে নিয়ম অনুযায়ী মুচলেখা নেওয়া হয়েছে। অচিরেই উপজেলার সকল চেয়ারম্যান, মেম্বার ও কাজীদের নিয়ে বসব। এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ কেউ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।