বঙ্গবন্ধু কন্যা সরকার প্রধান শেখ হাসিনার আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধা ভোগীরা আর্থসামাজিক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে। বাসিন্দাদের জীবন-মানের পরিবর্তন শুরু করেছে ফরিদপুরে পাঁচ হাজার পরিবার।
আগমী ২১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধিনে তৃতীয় পর্যায়ে সারা দেশে গৃহহীনদের মাঝে কবুলিয়ত, জমির খতিয়ান, গৃহ প্রদানের সনদসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন। এই দিন ফরিদপুরের নয় উপজেলায় ৪শ ৫৩ জন তাদের গৃহ আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে পাবে।
ফরিদপুর জেলায় ইতোমধ্যে ৪ হাজার ৭৫৬ হতদরিদ্র, গৃহহীন পরিবারে তাদের নিজস্ব আবাসনের সুবিধা পেয়েছেন। এখন তাদের সময় বদলেছে-পরিবর্তন হচ্ছে ছিন্নমূল মানুষের যাপিত জীবনের।
সরেজমিনে সালথা ও নগরকান্দা উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসতিরা বসবাস করছে রঙ্গিন টিন আর পাকা দেয়ালের আধাপাকা বাড়িতে। সেই বাড়িতেই করছে শাক- সবজির আবাদ। কেউবা করছে হাঁস মুরগি-ছাগল-গরু পালন। সন্তানদের পাঠাচ্ছে স্কুলে। বসতির দুশ্চিন্তা ছেড়ে নিশ্চিন্ত মনে কাজ করে এগিয়ে নিচ্ছে সংসার। সংসারে এসেছে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা। বসবাসের জন্য সরকারের দেওয়া এই সুবিধাটি পেয়ে খুশি আশ্রয়হীন মানুষগুলো।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তৃতীয় পর্যায়ের দুই শতাংশ জমি ছাড়াও এক একটি গৃহ নির্মানে জন্য সরকারি অর্থ বরাদ্দ ছিলো ২ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা।
জেলার সালথা উপজেলার বড়লক্ষণদিয়া এলাকার আশ্রয়ণের বাসিন্দা আরজিনা বেগম জানান ‘নিজের ঠিকানা পেয়েছি, আগে থাকার জায়গা ছিলো না, বাসা ভাড়া করে জীবন চলতো। সন্তারদের স্কুলে পাঠাবো ভাবতে পারিনি। এখন বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাতে পারছি, নিজের হাঁস-মুরগি পালনসহ নানা কাজ করার সুযোগ পেয়েছি, সত্যই এটা স্বপ্নের।’
একই কথা জানালেন নগরকান্দার মাঝিকান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আসমা পারভিন। তিনি জানালেন, আমি ও আমার স্বামী ঢাকায় পোষাক কারখানায় কাজ করতাম। যে বেতন পেতাম তা দিয়ে বাসা ভাড়া সংসার খবর করে কিছু থাকতো না। এখন এখানে ঘর পেয়েছি। স্বামী কৃষিকাজ করে আমি হাস-মুরগির পালন করছি। মাস শেষে কিছু টাকা জমা করতে পারছি।একটি ছেলে তাকে স্কুলে ভর্তি করবো। এখন বেশ ভাল আছি।
কথা হয় সালথা ইউএনও তাসলিমা আকতার ও নগরকান্দা ইউএনও ইমাম আল রাজি টুলুর সাথে। এই কর্মকর্তারা জানালেন, ‘আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দারা তাদের জীবন মান উন্নয়নে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে, আমরা সরকারে পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করছি, এই প্রকল্প পৃথিবীতে একটি রোল মডেল, কারণ এভাবে কোন দেশে অশ্রয়হীনদের জন্য সরকারি ভাবে নিরাপদ ছাঁদ তৈরী ব্যবস্থা করা হয়নি।’
জেলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বরাদ্দ ও কাজের আগ্রগতির বিষয়ে কথা হয় জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এটা সরকারের একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ। ইতোমধ্যে জেলা ৯৫ শতাংশ আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মান করা হয়েছে। পদ্মা সেতুতে যেমন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তেমন এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন, হতদরিদ্ররা তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করছে।’