“ আব্বা আমি আর পারছিনা! আমার নিঃশ^াস বন্ধ হয়ে আসছে, আমি আর সহ্য করতে পারছিনা। তোমরা আমাকে যে করেই হোক অর্থ যোগাড় করে চিকিৎসা দিয়ে বাঁচাও। আমি বাঁচতে চাই বাবা! আমি স্কুলে যেতে চাই,আমার বন্ধুদের সাথে খেলতে চাই।” কান্না করে কথা গুলো বলছিল লিভার জন্ডিসে আক্রান্ত পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভাধীন চোমরপুর গ্রামের দিনমজুর ও কাঠমিস্ত্রি আলী আকবর ও গৃহিনী ফুলপরি খাতুন দম্পতির একমাত্র ছেলে সালাউদ্দিন (১২)। সালাউদ্দিন আফতাবনগর ছেঁচানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ছেলেটির সারা শরীরে ব্যাথার কারণে দিন রাত বিছানায় শুয়ে শুধু চিৎকার করছে আর বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। চোখ দুটো হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে,মুখের ভেতর ঘা,থুথুর সাথে রক্ত পড়ছে,কোন কিছু খেতে পারেনা। দেড় বছর যাবৎ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ইতোমধ্যে সম্পদ যা ছিল সব বিক্রি করে প্রায় ৭/৮ লাখ টাকা খরচ করে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছেন তার বাবা। বর্তমানে বাড়ির দুই শতাংশ জায়গাটুকুই তার শেষ সম্বল। ছেলের চিকিৎসার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু গরীব পিতার পক্ষে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা আর সম্ভব হচ্ছেনা। তাহলে কি অর্থের অভাবে সালাউদ্দিনের জীবন প্রদীপ নিভে যাবে?
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,দের বছর আগে ২০২১ইং সালের জানুয়ারী মাসে হঠাৎ করে সালাউদ্দিনের পেটে ব্যথা অনুভব হলে দ্রুত সাঁথিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে,পাবনা,এনায়েতপুর,ঢাকা সোহরাওয়ার্দী ও ইবনেসিনা হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জানায় তার পেটে পাথর হয়েছে। পরবর্তীতে ইবনেসিনা হাসপাতালে অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মোখলেছুর রহমান ভূঁইয়ার মাধ্যমে ওই বছর জুন মাসে অপারেশন করে পাথর বের করা হয়। কিছু দিন সুস্থ্য থাকার পর আবার তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানায় তার লিভার জন্ডিস (এইচবিএসএজি পজিটিভ বা হেপাটাইটিস বি পজিটিভ) হয়েছে। প্রতিদিন তার প্রায় ৭/৮ শ’ টাকার ওষুধ লাগে। তাই বর্তমানে টাকার অভাবে ঢকার ক্রনিক ডিজিজ কনসালট্যান্ট এ- পাবলিক হেলথের স্পেশালিষ্ট হোমিওপ্যাথি ডাঃ সেলিমুর রহমানের চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সালাউদ্দিনের বাবা কান্নাজড়িত কন্ঠে জানান,আমার ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল।এখন আর কোন স্বপ্ন নেই,আমার ছেলেটা বাঁচলেই আমি খুশি। আমি অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছিনা। এ ছাড়া আমার ৩টি মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে ৯ম শ্রেণীতে অন্যটি ৩য় শ্রেণীতে লেখা পড়া করছে তাদের লেখা পড়ার খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাই আমি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আকুল আবেদন করছি আর্থিক সহায়তা করার জন্য।
সালাউদ্দিনের মা ফুলপরি খাতুন আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, আমার একমাত্র ছেলেটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে চাকরি করায়ে সংসারের হাল ধরাবো। কিন্তু সব স্বপ্ন ভেঙ্গে যাচ্ছে।অনেক আদরের ছেলেটা আমার অর্থ ও চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে মারা যাবে মা হিসেবে আমি কেমনে সইব!
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন,ছেলেটি অনেক মেধাবী ছাত্র। কিন্তু অসুস্থ হওয়ায় আর্থিক সংকটের কারণে চিকিৎসা না করায় স্কুলে আসতে পারছেনা। আমি আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করবো।
সাঁথিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শরিফ বলেন,সালাউদ্দিনকে চিকিৎসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু তার অভাবের সংসারে এত অর্থের যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তার চিকিৎসার জন্য দেশের সহৃদয় ব্যাক্তি ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সালাউদ্দিনের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করতে-বিকাশ নম্বর (ব্যাক্তিগত) ০১৭৪৫৮৬৭৮৪৯ (আলীআকবর); হিসাব নম্বর (সালাউদ্দিন-ষ্টুডেন্ট একাউন্ট) ২০৫০২৪৪৬৭০০১৮৮৪১১ ইসলামি ব্যাংক, সাঁথিয়া শাখা, পাবনা।