পুকুরের ওপর ব্যতিক্রমী বাসরঘর বানিয়ে নজর
কেড়েছেন শেরপুরের মো. হালিম মিয়া(২৫) নামে এক ঝালাই ওয়ার্কশপ শ্রমিক।
শুক্রবার (২২ জুলাই) নিজের বিয়েতে ব্যতিক্রমী শখ থেকে তৈরি করে সাজানো হয়
এই বাসরঘর। খবরটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বাসরঘর দেখতে ভিড়
জমাতে শুরু করেন স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকার লোকজন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের
সাতানীপাড়া এলাকার মো. আবদুল হামিদের ৯ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট মো.
হালিম মিয়া। তিনি পেশায় একটি ওয়ার্কশপের ঝালাই শ্রমিক। তার ইচ্ছে ছিল
সীমিত সাধ্যের মধ্যে ব্যতিক্রমীভাবে নিজের বিয়ের আয়োজন করার। সেই ইচ্ছা
থেকেই এমন ভিন্ন আয়োজনের কথা মাথায় আসে তার। পরে তার নানা, চাচাসহ কয়েকজন
মিলে বাড়ির পাশে পুকুরের ওপর বাসরঘর তৈরির কাজ শুরু করেন।
বর মো. হালিম মিয়া বলেন, ‘আমার বিয়ের কথা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে
ব্যতিক্রমী কিছু করার বিষয় মনে হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে আমার নানা, চাচাসহ
বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি। তারা পুকুরের পানির ওপর বাসরঘর তৈরি করার উদ্যোগ
নেয়। গত চার-পাঁচ দিন ধরে আমার নানা, চাচাসহ কয়েক বন্ধু আমাদের বাড়ির
পাশে পুকুরের ওপর খুব কষ্ট করে এই বাসরঘর তৈরি করেন। পরে আশপাশের মানুষ
বাসরঘরটি দেখতে আমার বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন। বিষয়টি আমার কাছে খুব
ভালো লাগছে।’
হালিমের ভাতিজা রূপন ফরাজি ও সোহেল সরকার বলেন, ‘আমাদের চাচার ইচ্ছে ছিল
ব্যতিক্রমীভাবেবিয়ে করবেন। পরে তার বিয়ে ঠিক হলে আমরা পারিবারিকভাবে
কয়েকবার বসে সিদ্ধান্ত নেই কী করা যায়। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় পানির
ওপরে বাসরঘর করার। পরে বাড়ির পাশের পুকুরের মাঝখানে বাসরঘর তৈরির কাজ
শুরু হয়। বানানোর সময় অনেকেই আজেবাজে কথা বলেছে। তবে বাসরঘরটি সম্পূর্ণ
তৈরি হয়ে গেলে তা দেখতে মানুষ ভিড় করেন।’
টাংগারপাড়া এলাকা থেকে বাসরঘরটি দেখতে আসা তরুণ শোয়াইব রহমান বলেন, ‘
আমার জীবনে এমন বাসরঘর দেখি নাই। এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরে দেখতে
এসেছি। আসলেই বিষয়টি অন্যরকম।’
হেরুয়া তালুকপাড়া থেকে আসা মো. খায়রুল বাশার বলেন, ‘পানির মধ্যে বাসরঘর
তৈরির আইডিয়াটি সত্যিই চমৎকার। ঘরটি খুব ভালো হয়েছে।’
চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে
এমন একটি ব্যতিক্রমী বাসরঘর তৈরি করায় মানুষের মাঝে বেশ সাড়া পড়েছে এবং
হইচই শুরু হয়েছে। আমি নিজেও কখনো পানির ওপর তৈরি এমন বাসরঘর দেখিনি।
বাসরঘরটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ আসছে। এমন বাসরঘরের বিষয়টি নিয়ে
পুরো ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।’