তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় ছয় মাস পূর্বে পল্লী চিকিৎসক মিলন দপ্তরী (৩০) নিখোঁজের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে থানা পুলিশ। পরকীয়া প্রেমের কারণেই প্রবাসীর যুবকের বাবা ও স্ত্রী মিলে চোখে মরিচের গুড়া দিয়ে পরিকল্পিতভাবে মিলনকে হত্যা করে।
পরবর্তীতে লাশ মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন গ্রেফতারকৃত পরকীয়া প্রেমিকা ও তার শ্বশুড়। হত্যার শিকার পল্লী চিকিৎসক মিলন দপ্তরী জেলার হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ছয়গাঁও গ্রামের আবদুল খালেক দপ্তরীর ছেলে। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়া আসামিরা হলো, একই উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের পূর্ব খাগেরচর গ্রামের মৃত আবদুর রব ঘরামীর ছেলে আবদুর রশিদ ঘরামী (৬৫) ও তার প্রবাসী ছেলে মনির হোসেনের স্ত্রী রাহেলা বেগম (২৭)।
বুধবার সকালে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে হিজলা থানার ওসি মোঃ ইউনুস মিঞা বলেন, গ্রেফতারকৃতরা মিলন দপ্তরীকে হত্যা করে লাশ মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে বলে স্বীকার করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদালতের বিচারকের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। পরবর্তীতে বিচারকের নির্দেশে গ্রেফতারকৃতদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আসামীদের স্বীকারেক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি আরও বলেন, পূর্ব খাগেরচর বাজারে পল্লী চিকিৎসক মিলনের একটি ফার্মেসী রয়েছে। সেসুবাদে ওই এলাকার প্রবাসীর স্ত্রী রাহেলার সাথে দুই সন্তানের জনক মিলনের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি রাহেলার শ্বশুর রশিদ জেনে ফেলে। পরবর্তীতে নিজের সংসার টিকিয়ে রাখতে শ্বশুড়ের প্ররোচনায় রাহেলা গত ৩০ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ফোন করে মিলনকে ঘরে আনে। এরপূর্বে ওই ঘরের আলমিরার পেছনে লুকিয়ে থাকা রশিদ সুযোগ বুঝে মিলনের চোখে মরিচের গুড়া নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে মিলন পালিয়ে যাবার চেষ্ঠা করলে রাহেলার সহযোগিতায় রশিদ তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে তারা লাশ গুমের জন্য নিহত মিলনের পায়ে রশি দিয়ে বেঁধে টেনে নিয়ে প্রথমে বাড়ির সামনের খালে ও সেখান থেকে টেনে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
ওসি বলেন, মিলনের নিখোঁজের ঘটনায় তার ভাই সবুজ দপ্তরী গত ১ ফেব্রুয়ারী হিজলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। জিডির তদন্ত করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মিলনের সর্বশেষ অবস্থান জানতে পেরে সোমবার দিবাগত রাতে আবদুর রশিদ ঘরামী ও তার পুত্রবধূ রাহেলা বেগমকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা অকপটে হত্যার দায় স্বীকার করে লোমহর্ষক ঘটনার বর্ননা করেন। তবে নিহত মিলন দপ্তরীর লাশের কোন সন্ধান মেলেনি জানিয়ে ওসি বলেন, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।