ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে মাদক নিয়ে সিরিজ রিপোর্টিং চললেও নীরব প্রশাসন। গাঁজা, মদ, ইয়াবাসহ সকল প্রকার মাদক খুব সহজে মিলছে ক্যাম্পাসটিতে।ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে মাদকের সামাজ্যে। মাদকের তীব্র ভয়াবহতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে থাকলে শুধু সাময়িক বহিষ্কার দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইলেও এসব ঘটনা থামাতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সহজলভ্য মাদকের অর্থ সংগ্রহ করতে শিক্ষার্থীরা জড়িয়ে যাচ্ছে ছিনতাই ও সন্ত্রাসে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এ বছরের প্রথম মাসে ‘অতিরিক্ত মাদক সেবনের ফলে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন ইবি শিক্ষার্থী সজিব (ছদ্মনাম)’ বলে মাদকের রিপোর্টিংয়ের সূচনা। তিনি ক্লাস উদ্দেশ্যে বের হলেও তা বাদ দিয়ে গভির রাতে হলে ফিরতেন। পরবর্তী মাসে ‘আবাসিক হলে গাঁজা গাছ’ বলে দেশের বেসরকারী টিভি চ্যানেলের অনলাইনে ভার্সনে সংবাদ প্রচার হয়। মার্চে নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু ও এপ্রিল থেকে পবিত্র রমযান শুরু হওয়ায় এ পর্যন্ত কিছুটা বন্ধ থাকে মাদকের তৎপরতা। মে মাসে আবারো ‘প্রধান ফটকের সামনে থেকে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক করা হয়’। জুনে মাদকসহ ইবির দুই শিক্ষার্থী আটক করেছে থানা পুলিশ। সে ধারা অব্যাহত রাখতে জুলাই মাসে আবারো ‘কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে ছিনতাই করেন ইবি মাদকাসক্ত দুই শিক্ষার্থী’। এছাড়াও একাধিক মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে কর্মচারীদের বিরুদ্ধেও।
তবে এসব ঘটনা আর মানতে না পেরে পরিশেষে সোমবার (২৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে মাদকবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।
একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে ‘মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত অন্তত একডজন ছাত্রের নামেরও তালিকা করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত অন্তত সাতজনসহ পাতি পাঁচ ছাত্র নেতার নাম রয়েছে। মাদকসেবীদের দেওয়া তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক সরবরাহ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহির থেকে। ব্যবসায়ীদের বাড়ি থেকেও মাদক নিয়ে আসে শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসজুড়ে মাদকের সা¤্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে একটি ছাত্র সংগঠনের তিনটি উপগ্রুপের নেতারা। বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মারামারির ঘটনাও ঘটছে। তবে মাদকের নিয়ন্ত্রণ নিতেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় বলে জানা গেছে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের মতে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে মাদক চক্রের সন্ধান পাওয়া যাবে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনের অভিযান যেভাবে অব্যাহত আছে এভাবেই থাকবে। মাদক সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলতেই থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের জেলে পুরে কিছুই করা সম্ভব না। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নষ্ট হবে। তাদের মোটিভেশনাল কথা বলে রুখতে হবে। প্রশাসন ও পুলিশ নিজ জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব এ বিষয়ে অভিযান চালিয়ে যাবে।