বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারাবিশে^র অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। বাংলাদেশের রিজার্ভ কিছুটা কমেছে। ডলার ও তেলের দাম বেড়েছে। এখানে আমাদের কোন দোষ নেই। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং ডলার ও তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বিএনপি। বিএনপি কখনো দেশের মানুষের ভাল চায় না।’
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। চারঘাট পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।
সম্মেলন থেকে চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও ফকরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সম্মেলনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে লিটন বলেন, বিএনপি বলছে, ‘নির্দলীয় নিরেপক্ষ সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না।’ অতীতে বিএনপি নানা কথা বলেছে। কিন্তু নির্বাচন থেমে থাকে নি। সকল উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে সরকার ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে যেভাবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। আগামীতে বাংলাদেশে সেইভাবেই নির্বাচন হবে।
লিটন বলেন, দেশ স্বাধীনের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ গড়ার কাজ শুরু করেন। তখন স্বাধীনতাবিরোধীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে। বঙ্গবন্ধু হত্যার মুল নায়ক ছিল জিয়াউর রহমান। সামনে রাখা হয়েছিল খন্দকার মোস্তাককে।
লিটন আরো বলেন, শেখ হাসিনা দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ^ দরবারে আসীন হয়েছেন। আমাদের সেই নেত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করেছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ। আগামী নির্বাচনে আপনি (চাঁদ) যদি নির্বাচনে আসেন, তাহলে পরাজয় কাকে বলে তা বাঘা-চারঘাটের মানুষ দেখিয়ে দেবে। বাংলাদেশে বসবাস করে যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করে তাদের দেশে থাকার অধিকার নেই।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাষ্ট্রপতি সায়েমের কাছ থেকে ক্ষমতা কেরে নিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান হ্যা/না ভোটের আয়োজন প্রহসন করেছিলেন। সেই বিএনপির নেতাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। আর আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বিশ^াস করে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় থাকা যায় না। জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। তিনি গৃহহীনদের গৃহনির্মাণ করে দিয়েছেন, দেশের উন্নয়ন করছেন। শেখ হাসিনা আছেন বলেই বাংলাদেশ ভালো আছে।
চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা।
প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। সঞ্চালক ছিলেন চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম। সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সংরক্ষিত আসনের এমপি আদিবা আঞ্জুম মিতা, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান।
সম্মেলনের ১ম অধিবেশনে চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর দ্বিতীয় অধিবেশনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেনকে পুনরায় সভাপতি ও ফকরুল ইসলামকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।