রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় সালিশের নামে লিফলেট ছাপিয়ে এক ব্যক্তিকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা করলে পুলিশ শনিবার প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে রোববার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে হারাগাছ ইউনিয়নের ধুমগাড়া গ্রামে সালিশের নামে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছ্।
পুলিশ, স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানাগেছে, ভুক্তভোগী ভ্টুু মিয়া পেশায় একজন বাবুর্চি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয় রাতে পুত্রবধূর ঘরে প্রবেশ করেছে। এই অভিযোগ তুলে গত ২৯ জুলাই সালিশ ডাকা হয়। মসজিদ কমিটির নামে এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হয় এবং সামাজিকভাবে তাকে একঘরে করার ঘোষণা দেয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে গলায় জুতার মালা দিয়ে ঘোরানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালিয়ে শুক্রবার বিকেলে ধুমগাড়া জামে মসজিদের সামনে একটি খোলা মাঠে গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে মসজিদ কমিটির সদস্যরা সালিশ বসান। সেখানে প্রভাবশালী মনির হোসেন তাকে জোর করে জুতার মালা গলায় পরিয়ে গ্রামে ঘোরানো হয়। স্থানীয় আরেক প্রভাবশালি আবদুর রউফ সালিশে নেতৃত্ব দেন। এ সময় উত্তেজনা দেখা দিলে পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে মসজিদ কমিটির আবদুর রউফ বলেন,স্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ বসেছিল। তিনি জুতা পড়ানোর নির্দেশ দেননি।
ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির পুত্রবধূ বলেন, ওই দিন রাতের অন্ধকারে কেউ একজন তার ঘরে ঢুকেছিলেন। ওই সময় তার স্বামী ঘরে ছিলেন না। হঠাৎ ঘরে অন্য কাউকে দেখে তিনি চিৎকার দিলে ওই লোক পালিয়ে যায়। এদিকে স্থানীয় কয়েজন জানান, মনিরের সাথে টাকা-পয়সা নিয়ে বিরোধের জের ধরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সালিশের নামে নির্যাতন করা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, শনিবার ভুক্তভোগীর পরিবার দুজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করলে ওই রাতেই প্রধান অভিযুক্ত মনির হোসেনকে গ্রেফতার করে রোববার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুত্রবধূর ঘরে ঢোকার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্তে মিথ্যা বলে জানা গেছে।