আজ ৮ আগস্ট ২০২২ ইং শহীদ প্যারী মোহন আদিত্যের মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে টাঙ্গাইলে জেলার ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়াস্থ সৎসঙ্গ আশ্রমে পাকস্থিানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশিয় দোসরদের হাতে তিনি নৃসংস ভাবে নিহত হন। সকল ধর্মের মিলন ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের প্রবর্তিত সৎসঙ্গের সহ প্রতি ঋৃত্বিক, সৎসঙ্গ সংবাদের সহ-সম্পাদক, সৎসঙ্গের কার্যকরি পরিষদের সদস্য, সমাজ সেবক এবং সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলেন।
প্যারী মোহন আদিত্য ১৯৫৮ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের ব্যবহৃত পাদুকা ভারতের দেওঘর থেকে বহন করে এনে আশ্রম প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন।
যা আজও পাকুটিয়া সৎসঙ্গ আশ্রমে প্রদর্শিত আছে। ১৯৫৭ সালে শ্রীশ্রীঠাকুরের বানী ও আদর্শ প্রচার করার জন্য প্যারী মোহন আদিত্যের যগ্ম সম্পাদনায় সৎসঙ্গ সংবাদ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। কালে কালে আসে ১৯৭১ সাল। ২৫শে মার্চের রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তার ঢেউ লাগে টাঙ্গাইলে। ১৮ই এপ্রিল পাক-বাহিনী টাঙ্গাইল থেকে ময়মনসিংহের দিকে অগ্রসর হয়, রাস্তার দুই পার্শ্বের ঘর-বাড়ী জ¦ালিয়ে পুঁড়িয়ে আশ্রম এলাকায় প্রবেশ করে এবং ৫/৬টি শেলের আঘাতে মন্দিরের চূড়াটি ভেঙ্গে পড়ে।
কিন্তু তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরের সম্মুখে নিঃসঙ্গ চিত্তে ধ্যানমগ্ন হয়ে থাকলেন এবং প্যারী মোহন আদিত্যকে প্রতিকৃতি ভেবে আর কাউকে না পেয়ে গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে ময়মনসিংহের দিকে অগ্রসর হয়। তারপর ২১শে মে আনুমানিক ৯টায় ঘাটাইলের পাকুটিয়ায় হঠাৎ করে সাড়াশী আক্রমণ চালায় এবং পাক-বাহিনীর কাছে খবর ছিল যে, প্যারী মোহন আদিত্য মুক্তিবাহিনী তাই তাকে ঘাটাইল ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। তৎপর তিনি সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। খান্ত হয়নি পাকিস্তানি বাহিনী অবশেষে ১৯৭১ সালের ৮ই আগস্ট পাকুটিয়া সৎসঙ্গ আশ্রমে ১১ নং সেক্টরের কাদেরীয় বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার আলহাজ¦ খোরশেদ আলম তালুকদার (বীরপ্রতিক) নিজ কোম্পানীর জোয়ানসহ অবস্থান করছিলেন। ঐদিন আনুমানিক বিকাল ৩ টায় পাক সেনা বাহিনী টাঙ্গাইল থেকে মধুপুর যাওযার পথে পাকুটিয়া সৎসঙ্গ আশ্রমে মুক্তিযোদ্ধা আছে সন্দেহে আবারও আশ্রমে সাড়াসি আক্রমণ চালায়।
গোলাগুলির সময় একটি গুলি প্যারী মোহন আদিত্যের তলপেট ভেদ করিয়া বেরিয়ে যায়। আহত প্যারী মোহনের উপর বেয়োনেট দিয়ে অত্যাচার করে এবং তার কাছে আরো মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান চায়। কিন্তু দৃঢ়চেতা মানুষটিকে লাথি মেরে, বেয়নেট খুচিয়ে মেরে ফেলা হলেও মুখ খোলেননি। কোন তথ্য না দেয়ায় তাঁকে খুচিয়ে খুঁচিয়ে মেরে ফেলা হয়।