নোয়াখালীর সেনবাগে মাওলানা আবদুল ফাত্তাহ নামের এক মাদরাসার প্রধান কর্তৃক ১০ আবাসিক ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি জানাজানি হবার পর অত্র মাদরাসার শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সহযোগীতায় অভিযুক্ত পালিয়ে যাবার ঘটনায় পরো এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ওই ঘটনাটি ঘটেছে সেনবাগ উপজেলার ৯নং নবীপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের তা’লীমুল কুরআন মাদরাসায়। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আলহাজ¦ হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব অভিযুক্ত আবদুল ফাত্তাহকে প্রতিষ্ঠান পরিচালক পদ থেকে অব্যহতি দেয়।
জানাগেছে,তা’লীমুল কুরআন মাদরাসার আবাসিক ৮/১০ ছাত্রের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধান আবদুল ফাত্তাহ রাতে গুম থেকে তুলে নিয়ে ও মোবাইল ফোন আনা নেওয়াসহ বিভিন্ন অজুহাতে অফিস তার শয়ণ কক্ষে ডেকে নিয়ে অনৈতিক কর্মকা- বলাৎকারের ঘটনা ঘটায়। এরপর বলাৎকারের শিকার মাদরাসার ছাত্ররা বাড়ি গিয়ে আর মাদরাসায় আসতে না চাওয়ায় পরিবারের লোকজন মা-বাবা তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে মাদরাসায় পাঠাতে না পেরে মারধর করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর অভিভাবক ও এলাকার লোকজন বিষয়টি মাদরাসায় কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা কৌশলে অভিযুক্তকে মাদরাসা থেকে পালিয়ে যেতে সহযোগীতা করে। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অপরদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে মাদরাসায় থাকা আবাসিক ছাত্রদের তাদের অভিভাবকরা অত্র মাদরাসা থেকে অন্য মাদরাসায় নিয়ে ভর্তি করাচ্ছেন।
এব্যাপারে, মাদরাসার সভাপতি ছারওয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,মাদরাসার শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের কারণে ওই অভিযোগটি উত্থাপিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। বিনা দোষে কেন প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে বলেন অত্র মাদরাসার আবাসিক বিভাগ অচিলেই বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এব্যাপারে মাদরাসার চেয়ারম্যান আলহাজ¦ হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়বের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি অভিভাবকদের পক্ষ থেকে অত্র মাদরাসার প্রধানের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ ওঠায় তাকে স্বীয় পদ থেকে অব্যহতি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাকে কেন আইনের আওতায় আনা হয়নি এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,সে পালিয়ে যাবার কারণে তাকে আইনের আওয়াতায় আনা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আবদুল ফাত্তাহর মন্তব্য জানার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিক বার কল দেওয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এব্যাপারে কাওমী মাদরাসা শিক্ষকদের সংগঠন জামিয়াতুর মাদারিসিল সেনবাগ উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলনা আতাউল্লাহ সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি অবহিত নয় বলে জানান। এ সময় তিনি বিষয়টি ন্যাক্কার জনক বলে মন্তব্য করে বলেন কিছু দুচরিত্রের কারণে পুরো আলেম সমাজ আজ কঙ্কিত। তাকে আইনের আওতায় এনে শান্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
এব্যপারে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান মাওলানা মোঃ জহিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অবিভাবকদের পক্ষ থেকে মৌখিক ভাবে অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেন। এ সময় সরেজািমনে তদন্তে যাওয়া স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শায়েস্তানগরী ও আলমগীর ননীকে টাকা অপার করে এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ না করার চেষ্টা চালান।
এব্যাপারে সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল হোসেন পাটোয়ারীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এধরণের একটি ঘটনা শুনেছেন বলে জানান। তবে, কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নী। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।