‘বঙ্গমাতার সকল ছবিতেই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন মানুষের অবয়ব ফুটে ওঠে। তাঁর দূরদৃষ্টির উদাহরণ পাওয়া যায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময়, যখন তিনি বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি না নিয়ে জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত হওয়ার পরামর্শ দেন। এমন আরও অনেক কারণে বঙ্গবন্ধুর বঙ্গবন্ধু হওয়ার পেছনে বঙ্গমাতার অবদান সব থেকে বেশি।’ সোমবার (০৮ আগস্ট) রাজশাহী মহানগরীতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ্, এনডিসি এ কথা বলেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমিতে ‘মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা, অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা’ শীর্ষক আলোচনাসভা বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, আজকে আনন্দ-বেদনায় মিশ্রিত অনুভূতির দিন। এই মাসেই বঙ্গমাতার জন্ম, আবার এই মাসে মৃত্যু। বঙ্গমাতা সাদাসিধে বাঙালি নারীর প্রতীক। মাত্র ৪৫ বছরের জীবনে বঙ্গমাতা তাঁর নিজের কথা না ভেবে বাংলাদেশের জনগণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। কিভাবে দেশের মানুষকে ভালো রাখা যায়, মানুষের খোঁজ-খবর নেয়া যায় তা তিনি ভেবেছেন। বঙ্গবন্ধু যখন কারাগারে ছিলেন, তখন তিনি দেশের সামগ্রিক সংবাদ তাঁকে জানানো ও তাঁর সিদ্ধান্তগুলো জনগণের কাছে পৌঁছানোর গুরুদায়িত্ব পালন করেছেন। ৭ মার্চের ভাষণের আগে বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই অনেক পরামর্শ দিয়েছিল। কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে বলেছিল, কেউ নিষেধ করেছিল। কিন্তু বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে জনগণের চোখের দিকে তাকানোর পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, জনগণ যা চায় তুমি সেটাই বলবে। বঙ্গবন্ধু তাই করেছিলন। যে ভাষণ এখন সারা বিশে^র সেরা কয়েকটি ভাষণের একটি, এর নৈপথ্যে ছিলেন মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা।
এসময় নারীদের উদ্দেশে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমরা বঙ্গমাতার জীবনী থেকে শিখবো কিভাবে সংসার করতে হয়, কর্তাকে সাহস দিতে হয়, অনুপ্রেরণা দিয়ে সংসার সুন্দর করতে হয়।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবদুল জলিলের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আবদুল বাতেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক, পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদার, জাতীয় মহিলা সংস্থার রাজশাহী কার্যালয়ের চেয়ারম্যান বেগম মর্জিনা পারভীন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক শবনম শিরীন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠান শেষে রাজশাহী জেলার ৯৫ জন অসচ্ছল মহিলার হাতে সেলাই মেশিন ও স্বেচ্ছাসেবী মহিলা সমিতিগুলোর মাঝে ৮৬টি অনুদানের চেক তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া উপায় অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩০ জন অসহায় ও দুঃস্থকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।