বর্ষার আগমনে যেন কদম ফুলের হাসি ফুটেছে। প্রকৃতি সাজে ভিন্নরূপে। তবুও চিরচেনা অপরূপ সুন্দরের অধিকারী বনফুল কদম। এ বর্ষায় কদম ফুল ফুটেছে কয়রাসহ উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল এলাকায়। আর সেই চিরচেনা কদম ফুল এখন হারিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি ধোঁয়া আষাঢের বাতাসে কদম ফুলের ঘ্রাণ যেন স্বপ্নের রাজ্যে দোলা খাচ্ছে। গ্রাম-বাংলার প্রকৃতি আর বৃষ্টির প্রতিটি রিমঝিম ফোঁটা যেন সবাইকে সম্মোহিত করছে। গ্রামাঞ্চলের বর্ষার আগমন বার্তা কদম ফুল শহর কিংবা গ্রাম থেকে প্রত্যান্ত এলাকায় যেন আপন মহিমায় আগমন ঘটেছে। গাছে গাছে ফুটেছে কদম ফুল। একটি দুর্লভ ফুলের নাম কদম। তবুও কদম গাছ এখন কম চোখে পড়ছে। একসময় ছিল বর্ষার কদম ফুলকে নিয়ে গ্রাম-বাংলায় চর্চা হতো কবিতা ও ছড়া-গান সাহিত্যে ও উপন্যাস। শিল্প-সাহিত্যের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে কদম ফুলের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। কদম ফুল আমাদের বর্ষা ও আষাঢ মাসের দূত। প্রকৃতির বুকে যেন সৌরভ বাতাসে দুলছে কদম ফুল। জৈষ্ঠ্যের শেষে আষাঢের শুরুতে কদম ফুল ফোটে। কয়রা উপজেলা সহ উপজেলার সব গ্রামে যেন কদম ফুল হাসছে। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে। কদম ফুলের মৌ মৌ গন্ধে যেন দৃষ্টি কাড়ছে সবার। বর্ষার অনুভূতি ও অপরূপ সৌন্দর্যের দাবিদার কদম ফুল। তবুও আমরা যেন বাড়ির উঠানে একটি করে কদম গাছের সৌরভ পেতে চাই। কিন্তু বাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তার দু’পার্শ্বে ও পুকুরপাড়ে কদম গাছ ছিল চোখে পড়ার মতো। আষাঢের কদম গাছ ফুলে ফুলে ভরে থাকত। কদম ফুল সৌন্দর্যে পিপাসুদের তৃপ্তি দিত। তরুণ-তরুণীরা কদম ফুল তাদের প্রিয়জনকে উপহার দিত। মেয়েরা পরতো খোঁপায়। খেলায় মেতে উঠত শিশুরাও। ফলে কদম ফুলের গাছ ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্রে কাজে ব্যবহার হতো। ম্যাচ ফ্যাক্টরিতে কদম গাছের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কদম গাছ কমে যাওয়ায় এখন মানুষ ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে। সবাই এখন বাড়ির আঙ্গিনায় ফলমূল ও ফুলের গাছ লাগাচ্ছে। ফলে হারিয়ে যেতে বসেছে কদম ফুলের গাছ। কয়রার ইউপি সদস্য মুর্শিদা আক্তার বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতি ঐতিহ্য রায় কদম ফুলের অবদান রয়েছে। কদম ফুল সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ফলে সবার মন খুশি থাকে। কয়রা উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষন অফিসার এস এম নজরুল ইসলাম জানান, আমাদের সবকিছু ভুলে গিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় ফুল ও বনজ বৃরে চারা লাগানোর পাশাপাশি সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কদম গাছ লাগানো দরকার। এমনকি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি কদম ফুল খায়। বড়বাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল বাশার বলেন, ব্যক্তিপর্যায়ে ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও সরকারি-বেসরকারি জায়গায় কদম গাছ লাগানো প্রয়োজন। তাহলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। উত্তর বেদকাশি ইউপি চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, সৌন্দযের্ ও মন ভালো রাখতে হলে কদম ফুলের বিকল্প নেই। গ্রাম বাংলায় এই বর্ষায় আমাদের সবাইকে কমপক্ষে ১টি করে কদম ফুলের গাছ লাগানো প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।