মসজিদের আযান শুনে ও মুসলমানদের ধর্মীয় রীতিনীতি এবং আচার-আচরণে আকৃষ্ট হয়ে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে শেরপুরের শ্রীবরদীতে একই পরিবারের ৭ সদস্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে তারা এফিডেভিটের মাধ্যমে শেরপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির হয়ে আইনগতভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী উপজেলার ভেলুয়া ইউনিয়নের ভেলুয়া গ্রামের রবিদাস পরিবারের প্রধান ম-ল রবিদাস দীর্ঘদিন থেকে তার বাড়ির পাশের মসজিদ থেকে নামাজে আসার জন্য প্রচারিত আজানের বাণী শুনতে তার খুব ভালো লাগতো এবং তিনি খুব মনোযোগ দিয়ে ওই আযান শুনতেন। মাঝে মাঝে তিনি লুকিয়ে লুকিয়ে নামাজও পড়তেন। এলাকার বিভিন্ন জনের মুখে বিভিন্ন সুরা-ক্কেরাত শুনে তিনি মুখস্থ করতেন।
বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে ম-ল রবিদাস গ্রামবাসী,স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও ইউপি মেম্বারের কাছে পরামর্শ নেন কীভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবেন। একপর্যায়ে গত ১৯ আগস্ট রাতে তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও এক নাতীসহ পরিবারের ৭ সদস্য কালেমা পড়ে তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে এক কাপড়ে বেরিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় নেন। পরে বিষয়টি স্থানীয়রা জানলে তাদের পরামর্শে তারা এফিডেভিটের মাধ্যমে আদালতে গিয়ে আইনগতভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। ম-ল রবিদাসের বর্তমান নাম রাখা হয়েছে আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, কারো প্ররোচনায় বা হুমকিতে নয়, শান্তির ধর্ম ইসলামকে ভালোবেসে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা জানান, ম-ল রবিদাসের পরিবারের সদস্যরা স্বেচ্ছায় ইসলাম ধর্মের নানা আচার-আচরণে উদ্বুদ্ধ হয়ে ইসলামকে ভালোবেসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান সরকার বলেন, অনেক দিন থেকেই ম-ল রবিদাসের পরিবারের সদস্যরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণের জন্য এলাকার বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ ও পরামর্শ করে আসছিলেন। পরে রবিদাসের এক ভাই ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সাথে কথা বলে তাদের অনুমতিক্রমে প্রথমে কালেমা পড়ে এবং পরে এফিডেভিট করে আদালতের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
হিন্দু ধর্ম থেকে যারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তাদের ইসলামি নাম রাখা হয়েছে যথাক্রমে ম-ল রবিদাস থেকে আব্দুল্লাহ, তার স্ত্রী সুকিয়া থেকে আমেনা, মেয়ে সোনিয়া থেকে ফাতেমা, ছেলে শুভ থেকে ওমর ফারুক, আকাশ থেকে উসমান আলী ও বাদল থেকে হযরত আলী এবং নাতী লাবন থেকে হোসাইন।
আইনজীবী আলমগীর কিবরিয়া কামরুল বলেন, আদালতের মাধ্যমে আইনসম্মতভাবে তাদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কার্যাদি সম্পন্ন করা হয়েছে।