বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রয়োজন নেই, তবে শিক্ষক কর্মচারী অটো জাতীয়করণ হবে। কিভাবে শিক্ষক কর্মচারী জাতীয়করণ হবে? এমপিওভুক্ত শিক্ষক অবসর হওয়ার ১ বৎসর আগে থেকে তাঁর নিজ কোড অনুযায়ী সরকারী পর্যায়ে ১২ মাস সরকারীভাবে বেতন পাবেন। তারপর অবসর নিবেন। অবসর নিলে সরকারী ম্যানুয়েল মোতাবেক তাঁকে টাকা-পয়সা দিতে হবে এবং পেনশন দিতে হবে। এ পদ্ধতি দাবী নয়। এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে সকল বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীকে ধীরে ধীরে স্বল্প অর্থ ব্যয়ে জাতীয়করণ করা সম্ভব। সবাই জাতীয়করণ হবে। তবে একসঙ্গে ২/৩ লক্ষ শিক্ষক-কর্মচারীকে জাতীয়করণ করতে হবে না। যতবার বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণের আন্দোলন ডেকছেন ততবারই সরকার অর্থের চিন্তায় হিমশিম খেয়েছেন। বিরাট অর্থের প্রয়োজনহেতু কোন সৎ পরামর্শ বা সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। আজ নতুন পদ্ধতির কথা বলছি। এ গবেষণা কেউ কোনদিন করেনি বা বলেননি।
সবচেয়ে খারাপ লাগে, আজ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি পার হয়েছে অথচ বেসরকারি শিক্ষক সমিতির কর্মকর্তা'রা বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদের জন্য উৎসব ভাতা ২৫% ভাগ থেকে ১০০% ভাগ করার জন্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারেনি। এজন্য বাংলাদেশের অনেক শিক্ষক-কর্মচারী কোরবানি করতে পারে না। সমাজের কাছে তাঁরা হেয় প্রতিপন্ন হয়। সরকার শতভাগ উৎসব ভাতা দিতে চাইলেও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মকর্তা'রা কেন এরিয়ে গেলেন? আর শতভাগ উৎসব ভাতার প্রয়োজন নেই।
এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছেন সরকার ফলে যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছে। পূর্বের ধারা পরিবর্তন করে যদি শিক্ষক নিয়োগ করা যায়, তাহলে উপরিউক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে গোটা বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে ধীরে ধীরে জাতীয়করণ করা সম্ভব। এ পদ্ধতি প্রকাশের সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সরকারের ক্ষতি হবে না, বরঞ্চ দেশের লাভ হবে; মানুষ গড়ার কারিগরদের মূল্যায়ন করা হবে।
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ভেবে দেখেছেন কি? প্রত্যেক উপজেলায় ১ টি কলেজ ও ১ টি হাই স্কুল সরকারী ঘোষণা করে কেহ বড় হয়েছে আবার কেহ নিচে নেমেছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ইউনিয়ন পর্যায়ে নামকরা স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও সেগুলি জাতীয়করণের তালিকায় কোন দিন আসবে না। অনেক অনেক বিদ্যালয় কলেজ আছে ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও সেগুলো সরকারী হওয়ার সম্ভবনা নেই। একই দেশে একই প্রতিষ্ঠান সরকারী হবে অথচ অন্য প্রতিষ্ঠান সরকারী হবে না এ কেমন রীতি? তাই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ না করে, শুধুমাত্র শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর যাওয়ার ১ বৎসর আগে প্রতি মাসে সরকারী বেতন প্রদান করে ১২ মাস বেতন দিতে হবে। তারপর সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের ন্যায় পেনশন দিলে এক ঢিলে ২ পাখি মারার মত এককভাবে জাতীয়করণ ও পেনশন দেওয়া হলো।
সরকার ইচ্ছে করলে এ পদ্ধতির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চির কল্যাণকর কাজটি করে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবেন।
লেখক: শিক্ষক ও গণমাধ্যম কর্মী।