খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় গলায় ফাঁস দিয়ে আল-আমিন(৩০) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করে। সৎ পিতা মো: শাহ আলম পুলিশকে এ ঘটনা জানায়। ঘটনাটি ঘটে ২০জুলাই বুধবার বিকেল ৫টার দিকে। ঘটনার ১মাস ৮দিন পর ২৫ আগস্ট আদালতে স্ত্রী সোনালী আক্তার হত্যা মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞবিচারক থানাকে মামলা রেকর্ড করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। লক্ষ্মীছড়ি থানা পুলিশ ২৯ আগস্ট মামলাটি রেকর্ড করেছে বলে জানা গেছে। সি.আর মামলা নং-০২/২০২২, তাং ২৯.০৮.২০২২ই।। লক্ষ্মীছড়ি থানার অফিসার্স ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভূইয়া বলেন, আদালতের আদেশটি আমরা পেয়েছি। মামলা রেকর্ড সহ যাবতীয় আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ চলমান রয়েছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই মো: কামাল উদ্দিন জানান, পুরো ঘটনা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই মামলার বাদী সোনালী আক্তার (২৯) পিতা- মৃত পাথর মনি চাকমা মাতা- চিপ্রুমা চাকমা স্বামী- মৃত আল আমিন সাং- জুর্গাছড়ি, লক্ষীছড়ি বাজার থানা- লক্ষীছড়ি। জেলা- খাগড়াছড়ি। আসামিরা হলো ১। মো: শাহ আলম প্রকাশ শফি আলম (৫৫) পিতা- মৃত ভোলা মিয়া ২। মো: মাসুদ (২৫) পিতা- মো: শাহ আলম ৩। মো: রুবেল (৩০) পিতা- মো: শাহ আলম ৪। মো: শাহজাহান (৪৫) পিতা- মৃত ভোলা মিয়া সর্বসাং- জুর্গাছড়ি, লক্ষীছড়ি বাজার থানা- লক্ষীছড়ি জেলা- খাগড়াছড়ি। মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে ৪জনকে। বাদী তার আরজিতে উল্লেখ করেন আমি নওমুসলিম মহিলা হই। মো: আলআমিন এর সাথে দীর্ঘ দিনের জানাশুনার কারণে ভালোবাসার প্রকৃত বন্ধন সৃষ্ট ধর্মান্তরিত হয়ে পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নোটারী পাবলিক এর কার্যালয়, চট্টগ্রাম আদালতে সম্পাদিত হলফনামা নং- ০৩, তারিখ- ১২/১২/২০১২ ইং মূলে মো: আলআমিন এর সাথে বিবাহ হয় এবং পরবর্তীতে বিগত ১৮/০১/২০১৪ ইং তারিখ কাজী মৌলানা জামাল উদ্দীন, কামিল হাদিস, ও ফিকাহ্ মুসলিম নিকাহ্ ও তালাক রেজিষ্ট্রার ৩১ নং আলকরণ ওয়ার্ড, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর মাধ্যমে নিকাহ্ নামা সম্পাদন করা হয়। বিবাহের পরবর্তী শ্বশুর বাড়ী লক্ষীছড়ি বাজার এলাকায় আলআমিনের সৎ বাবা, সৎ দুই ভাই ও আপন দুই বোনসহ বসবাস শুরু করি। বসবাসরত জায়গাটি স্বামী আপন বাবা মৃত মো: শফিউল আলমের নামে রেকর্ডভূক্ত আছে। গত ২০/০৭/২০২২ ইং তারিখে একাধিকবার ফোন করে পায়নি। বিগত ২১/০৭/২০২২ ইং তারিখে রাত অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় ফরিয়াদী ২ নং সাক্ষীর মাধ্যমে জানতে পারি পুলিশ বিগত ২০/০৭/২০২২ ইং তারিখ বিকাল ৫.০০ ঘটিকার সময় তার স্বামী ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে এবং পর দিন অর্থাৎ ২১/০৭/২০২২ ইং তারিখে কোন ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ না করে তড়িঘড়ি করে তার স্বামীকে দাফন সম্পন্ন করেছে।
উক্ত সংবাদ পেয়ে পর দিন ২২/০৭/২০২২ ইং তারিখ সকাল অনুমান ৯.৩০ ঘটিকার সময় স্বামীর বাড়িতে এসে আসামীগণকে তার স্বামী কিভাবে মৃত্যু বরণ করেছে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসামীগণ একেকজন একেক ধরণের কথাবার্তা বলতে থাকে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন, স্বাক্ষীগণ ও ছবি দেখে বুঝতে পারি স্বামীকে আসামীগণ পরস্পর যোগসাজশে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছে। কারণ গলায় গামছা মাধ্যমে ফাঁস দেওয়া এবং গলার মাঝে গামছার তিনটি গিট দেওয়া এবং উপরের মাথায় হরকা গিট দেওয়া ছিল, পা মাটিতে স্পর্শরত ছিল এবং পায়ের সাথে লাগানো অবস্থায় চকি ছিল, বাম পাশে ঘরের খুটি ও বেড়ার কাঠবাতি যাহা দেহ থেকে ১ ফুট ফারাক ছিল। ফরিয়াদীর স্বামী যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে আত্মহত্যা করতেন তাহলে মৃত্যুকালীন সময়ে নুনত্যম চেষ্টা করলে বাঁচতে পারত।
ঘটনা স্থলের স্বাক্ষীদের বক্তব্য ও মৃত্যুর পরবর্তী কয়েকটি ছবি পর্যালোচনা করলে সুষ্পষ্ট হয় যে, এটি আত্মহত্যা ছিল না বরং এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা কান্ড ছিল। এ বিষয়ে একাধিকবার থানায় অভিযোগ করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে অভিযোগ গ্রহণ করেনি। নিরুপায় হয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শ ক্রমে কিঞ্চিত বিলম্বে বিজ্ঞ আদালতে অত্র অভিযোগ দায়ের করলাম। বাদী পক্ষের আইনজীবী এড. জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, বিজ্ঞ আমলী আদালতে
বিজ্ঞবিচারক অতিরিক্ত চীফজুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড মো: জাহিদ হোসেন ৩ দিনের মধ্যে মামলা রেকর্ড করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য লক্ষ্মীছড়ি থানাকে নির্দেশ দেন।