রাজধানীর নাগরিকদের সড়ক পথে চলাচলে অনেক বিড়ম্বনা, যানজটের সাথে যুদ্ধ করতে হচ্ছে মেট্টারেল প্রকল্পের কাজের জন্য। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্টোরেল চালুর কথা থাকলেও আপাতত: উত্তরা থেকে আগার-গাঁও পর্যন্ত মেট্টোরেল চালুর কথা ভাবছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরে চালু হবে। আর ঢাকার প্রথম মেট্টোরেলে ভ্রমণের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্টোরেলের পথের দূরত্ব ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। আগস্ট পর্যন্ত মেট্টোরেল প্রকল্পের কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ শতাংশের কিছু বেশি। উত্তরা থেকে আগার-গাঁও অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৯৪ শতাংশের মতো। আগার-গাঁও থেকে মতিঝিল অংশের পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। সরকার মতিঝিল থেকে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত মেট্টোরেল বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত এর কাজ শুরু হয় নি। তবে সরকার আশা করছে, আগামী বছরের ডিসেম্বরে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্টোরেল যাতায়াত করবে। মেট্টোরেল নির্ধারণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।
রাজধানীতে বসবাসরত মানুষেরা তাদের প্রয়োজনে যত যাতায়াত করে, তার ৭২ শতাংশই বাস-মিনিবাসে। এই যাত্রীদের ৪০ শতাংশই কম দূরত্বের পথে যাতায়াত করে। ১০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি চলাচল করে বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিক্সায়। আর এসব মানুষই হবেন মেট্টোরেলের যাত্রী। বর্তমানে ঢাকার বাস-মিনিবাসে সর্ব নিম্মভাড়া ৮ থেকে ১০ টাকা। যারা এখন সর্বনিম্ন ভাড়া দিয়ে দু’ তিন থেকে কিলোমিটার দূরে নেমে যান, তাদের জন্য এ ভাড়া কিছুটা বেশি। কারণ এক স্টেশন পর নেমে গেলেও মেট্টোরেলে যাত্রীকে ২০ টাকা দিতে হবে। তবে যারা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা রাইড শেয়ারিং চলেন তাদের জন্য মেট্টোরেল সাশ্রয়ী হবে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন শহরেও প্রায় ৭০০ কিলোমিটার মেট্টোরেল লাইন রয়েছে। সেখানে সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ রুপি এবং সর্বোচ্চ ৬০ রুপি। দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লীতে মেট্টোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ রুপি আর সর্বোচ্চ ৬০ রুপি। ভারতে মেট্টোরেলে ব্যবস্থা অনেক বিস্তৃত। ফলে যাত্রীরা মেট্টোরেলে একাধিক পথে বাহু গন্তব্যে যাতায়াত করেন। ঢাকায় শুধু একটা পথেই মেট্টোরেল চালু হতে যাচ্ছে।
ঢাকায় মেট্টোরেলের ভাড়া নিয়ে অনেকেই বিতর্ক করলেও সরকার বলছে, পরিচালনা ব্যয়, সুযোগ-সুবিধা ও আরামদায়ক ভ্রমণ বিবেচনায় নির্ধারিত ভাড়া যৌক্তিক। আমরা মনে করি, যাত্রী সেবার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করলে মানুষ বেশি ভাড়া দিয়ে মেট্টোরেলে উঠবে। নইলে তারা বাসে - মিনিবাসে এখন যেমন যাতায়াত করে তেমনি করবে সাশ্রয়ী হতে। তখন আবার মেট্টোরেল আরেকটি শে^ত হস্তি না হয়ে যায়?