জামালপুরের ইসলামপুর এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান পচাবহলা জামেদ আলী দাখিল মাদ্রাসার নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক থাকলেও নেই কোন শিক্ষার্থী এবতেদায়ী শাখায়। এলাকাবাসিরা জানায় মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখার প্রথম শ্রেনী থেকে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থী নেই। অথচ ৪২জন শিক্ষার্থী দেখিয়ে ৪২টি ভূয়া অভিভাবককে ভোটার বানিয়ে প্রতিষ্ঠানের সুপার ছামিউল হকের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের পায়তারা করে আসছেন। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী বাদি হয়ে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একধিক লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, পচাবহলা জামেদ আলী দাখিল মাদ্রাসার এবতেদায়ী শাখার বিগত ১০বছর ধরে ১ম শ্রেণির থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত কোন কোন শিক্ষার্থী নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সুপার ছামিউল হক ১ম শ্রেণির থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী না থকলেও তিনি ৪২টি ভূয়া অভিভাবক সাজিয়ে ভোটার বানিয়েছেন। সেই ভূয়া ভোটার তালিকা করে এডহক কমিটির যোগশাজসে ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের পায়তারা করে আসছেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখাগেছে,গত ১০বছর ধরে ছাত্র শুন্য অভিযোগের সত্যতা স্ব-চোখে দেখতে মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটিতে সরেজমিনে গিয়ে এবতেদায়ী শাখার ১ম শ্রেণির থেকে ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থী পাওয়া যায়নি। তালা ঝুলছে এবতেদায়ী শাখার ক্লাস রুম গুলোতো। শুধু পঞ্চম শ্রেনির একজন শিক্ষার্থীকে পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু হাজিরা খাতায় কাগজে কলমে ১ম শ্রেনি-১৮,২য় শ্রণি-১০, ৩য় শ্রনি-১১, ৪র্থ শ্রেনি-১০ ও ৫শ্রনির ৩৭জন শিক্ষার্থীর না রয়েছে, যারা কোন দিন বিদ্যালয়ে আসে না। অথচ্য দাখিল সংযোক্ত প্রতিষ্ঠান এবতেদায়ী শাখার প্রধানসহ তিনজন শিক্ষক পাঠদান বিহীন বসে বসে দীর্ঘ দিন ধরে সরকারের বেতন ভাতা ভোগ ভোগ করছেন। এদিকে এবতেদায়ী শাখা ছাত্র শুন্য হওয়ার ব্যাপারে সহকারী মৌলভী শিক্ষক মোহম্মদ আলী ও সহকারী জুনিয়র মৌলভী শিক্ষক মতিউর রহমানসহ অন্যান্য শিক্ষকরা জানান,এবতেদায়ী শাখার ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলের ন্যায় উপবৃত্তি ও দুধ-বিস্কুট না পাওয়ায় কোন শিক্ষার্থী থাকে না। জানুয়ারীতে ভর্তি হলেও পরবর্তীতে তারা চলে যায়।
অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের সুপার ছামিউল হক মাদ্রাসার শিক্ষানীতি বহি:র্ভূতভাবে ক্ষমতা অপব্যবহার করে শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে জিম্মি করে উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপার ভাইজার মোহাম্মদ মামুন অর রশিদকে নির্বাচন অফিসার নিযুক্ত করেছেন। এমনকি নির্বাচনী তফসিল গোপন রেখে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য আগামী ২৫সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, গত ২৯/০৮/২০২২ ইং তারিখে স্বাক্ষরিত ওই ভূয়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ও ঘোষিত তফসিল মোতাবেক নির্বাচন সম্পন্ন করার পায়তারা করছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ,ঘোষিত তফসিল যথা সময়ে প্রকাশ না করে মাদ্রাসার বোর্ডে না টানিয়ে শেষের দিন নোটিশ বোর্ডে টানানো হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর ০৪/০৯/২০২২ ইং হতে ০৬/০৯/২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত অভিভাবক ও অন্যান্য ক্যাটাগরির ভোটারদের নির্বাচনী ফরম ক্রয় করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
এব্যাপারে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সচেতন অভিভাবকরা গত ৮সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ মামুন-অর-রশীদের নিকট অভিযোগ করলেও রহস্য জনক কারণে তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি।
এ বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ মামুন-অর-রশীদ তিনি জানান, কোন লিখিত অভিযোগ পায়নি। তাই তার করার কিছুই নেই।
এব্যাপারে পচাবহলা জামেদ আলী দাখিল মাদ্রাসার সুপার ছামিউল হকের সাথে কথা হলে উপর্যুক্ত অভিযোগ তিনি অস্বীকার করে বলেন যথা নিয়মেই তফসিল ঘোষণা ও প্রকাশ করা হয়েছে মাদ্রাসা নোটিশ বোর্ডে। কোন অনিয়ম ও দূর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়নি।
এবতেদায়ী শাখার ছাত্র শুন্য কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, শিক্ষার্থী ছাড়া কি প্রতিষ্ঠান চলে। অনেক সময় ছাত্র ছাত্রী তো অনুপস্থিতও থাকে তাই করার কিছুই নেই।
এব্যাপারে সচেতন অভিভাকরা উপর্যুক্ত অনিয়ম দূর্নীতি সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক ভূয়া ভোটার তালিকায় ও তফসিল গোপন নির্বাচন বাতিল করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন জানিয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছন।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হাসান রুমান জানান, তিনি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন, বিষয়টি তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।