নওগাঁর মান্দায় অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সালিস বৈঠকে এক গৃহবধূর বিচার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সালিসে ওই গৃহবধূর ইজ্জতের মূল্য হিসেবে যুবকের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ৬০ হাজার টাকা। ঘটনার পর স্বামীর ঘরে ফিরতে না পারায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন ওই গৃহবধূ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিচারের রায়ের টাকা আদায় করতে দিনভর ওই গৃহবধূকে মেম্বার নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে আটক করে রাখা হয়। পরে যুবক হোসেন আলীর কাছ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কৌশলে তাকে পালিয়ে দেন মাতবরেরা। জরিমানার পুরো টাকাই পকেটস্থ করেন ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লা।
বুধবার দিনভর উপজেলার নলতৈড় গ্রামে ইউপি সদস্যের খলিয়ানে এ সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ পেয়ে সালিস বৈঠক থেকে ভিকটিম গৃহবধূকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লাকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ‘গত মঙ্গলবার রাতে হোসেন আলী (৩২) নামে এক যুবক কৌশলে ওই গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় তার স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। বিষয়টি টের পেয়ে হোসেন আলীসহ ওই গৃহবধূকে আটক করেন আশপাশের লোকজন।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, ঘটনায় বুধবার সকালে মেম্বার নাজিম উদ্দিন মোল্লার খলিয়ানে সালিসের আয়োজন করা হয়। সালিসে সভাপতিত্ব করেন মেম্বার নাজিম উদ্দিন মোল্লা। দিনভর সালিসে মামুনুর রশীদ, মিনহাজ কাজল, তোফাজ্জল হোসেন, তোতা মোল্লা, মকলেছার রহমান, মোহাম্মদ আলী, সাইদুর রহমান, মোস্তফা কাজলসহ এলাকার আরও অনেক মাতবর উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে গৃহবধূর ইজ্জতের মূল্য ৬০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে যুবক হোসেন আলীর কাছ তা আদায় করা হয়। পুরো টাকা আদায়ের পর তা পকেটস্থ করেন ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লা। এ সময় কৌশলে হোসেন আলীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন মাতবরেরা।
অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে হোসেন আলী ও গৃহবধূর বিচার করার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করেন সালিসের সভাপতি ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন মোল্লা। তিনি বলেন, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হোসেন আলীর ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাৎক্ষনিকভাবে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন হোসেন আলীর পরিবার। আদায়কৃত পুরো টাকাই সালিসের খরচ হিসেবে নেওয়া হয়েছে।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ভিকটিমের জবানবন্দীর ওপর ভিত্তি করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।