জেলার উজিরপুর উপজেলার সরকারী শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রিতে বাঁধা দিয়ে বিপাকে পরেছেন শাকিল মাহমুদ আউয়াল নামের এক ছাত্রলীগ নেতা। তিনি ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
স্থানীয় চিহ্নিত মাদক বিক্রেতাদের কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও মাদক বিক্রির নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় ওই ছাত্রলীগ নেতাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেছে মাদক বিক্রেতারা। এমনকি মাদক বিক্রেতারা ছাত্রলীগ নেতার ভাইয়ের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। উল্টো হয়রানীর উদ্দেশ্যে ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে ছাত্রলীগ নেতা শাকিল মাহমুদ আউয়ালসহ একাধিক ছাত্রলীগ নেতারা অভিযোগ করেন, স্থানীয় চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা আরিফ মীর, মারজু বিশ্বাস, জাহিদ মীর, শান্ত মৃধা ও মোঃ হোসেনসহ তাদের সহযোগীরা দীর্ঘদিন থেকে সরকারী শেরে বাংলা ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রি করে আসছিলো। এমনকি বহিরাগত এসব যুবকরা প্রায়ই ক্যাম্পসের মধ্যে থাকা একটি পুরাতন টিনের ঘরে বসে মাদক সেবন করতো। এনিয়ে কলেজ অধ্যক্ষসহ ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের একাধিকবার নিষেধ করে হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন।
কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জুলমত সরদার বলেন, গত ১৪ সেপ্টেম্বর কলেজ ক্যাম্পাসে মাদক বিক্রির খবর পেয়ে মাদক বিক্রেতা আরিফ ও শান্ত মৃধাকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যাম্পাসের মধ্যে বসেই আমাকে (জুলমত) মারধর করে। তাৎক্ষনিক বিষয়টি আমি ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সভাপতি শাকিল মাহমুদ আউয়াল খানকে জানাই। তিনি (আউয়াল) ঘটনাস্থলে আসলে মাদক বিক্রেতারা তাকেও লাঞ্ছিত করে। একপর্যায়ে খবর পেয়ে থানা পুলিশ কলেজ ক্যাম্পাসে উপস্থিত হলে মাদক বিক্রেতারা পালিয়ে যায়।
ছাত্রলীগ নেতা শাকিল মাহমুদ আউয়াল বলেন, ওই ঘটনার জেরধরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে আমার বড় ভাইয়ের শিকারপুর বন্দরের বধূয়া ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোরে উল্লিখিত মাদক বিক্রেতারা তাদের সহযোগীদের নিয়ে প্রকাশ্যে তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় আমার বড় ভাই শিকারপুর বন্দর ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক করিম খান বাদী হয়ে ওইদিনই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তবে রহস্যজনক কারণে পুলিশ আমাদের মামলা না নিয়ে উল্টো মাদক ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দায়ের করা অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন। যাতে আমাকে (ছাত্রলীগ নেতা শাকিল মাহমুদ আউয়াল) ও আমার বড় ভাই করিম খানকে আসামি করা হয়েছে।
সূত্রমতে, কলেজ ক্যাম্পাসে গাঁজা ও ইয়াবা বিক্রির মূলহোতা পূর্ব মুন্ডুপাশা এলাকার মীর আবদুল হাইয়ের ছেলে আরিফ মীরের বাড়িতে সম্প্রতি সময়ে র্যাব-৮ এর সদস্যরা অভিযান চালিয়ে বাড়ির ছাদের ওপর চাষ করা গাঁজার গাছসহ আরিফকে আটক করেছিলেন। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি এখনও চলমান রয়েছে। তাছাড়া আরিফ মীর উপজেলার নতুন শিকারপুর এলাকাস্থ একটি পরিত্যক্ত ঘরের মধ্যে ইয়াবা সেবনরত অবস্থায় থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলো।
এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার ওসি মোঃ কামরুল হাসান বলেন, দোকানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তবে ভুক্তভোগীর অভিযোগে ত্রুটি থাকায় তা সংশোধন করে দিতে বিলম্ব হওয়ায় এখনও মামলা হিসেবে এজাহারভুক্ত করা হয়নি। ওসি আরো বলেন, থানায় দায়ের করা উভয় অভিযোগের তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।