পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে প্রতিপক্ষরা। সোমবার বিকেল ৪ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাকুরিয়া বাজারে প্রায় দুই শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায় বলে জানা গেছে। আর এই ঘটনার নেতৃত্ব দেন সাবেক ইউপি সদস্য আলিফ হোসেন ও ইটালী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। ঘটনার সময় দেশীয় অন্ত্রের ঝলকানিতে গ্রামজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মনোনিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর ভোট করাকে কেন্দ্র করে পাকুরিয়া গ্রামে স্থানীয় আ.লীগের দুটি পক্ষের জন্ম হয়। আর এরপর থেকেই এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন সরকারি পুকুর দখল এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠনে সংঘাত-দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রুপ নেয়। এ ছাড়া সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম এর কাছে ভোটে হেরে যান সাবেক ইউপি সদস্য আলিফ হোসেন। এরপর থেকেই নতুন করে এলাকায় সংঘাতের সৃষ্টি হয়। চলতি মাসের ২৫ সেপ্টেম্বর বাদ আছর পাকুরিয়া বাজার জামে মসজিদের মুয়াজ্জিম নিয়োগ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে নতুন করে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এবং সোমবার পাকুরিয়া বাজারে অবস্থিত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের কার্যালয়, সাবেক ইউপি সদস্য ও সাবেক ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তা লাল চক্রবর্তীর মার্কেট এবং অ্যাডভোকেট মানিক লাল চক্রবর্তী চেম্বারসহ ৮ থেকে ১০টি দোকানে ভাংচুর ও লুটপাট চালায় প্রতিপক্ষ সাবেক ইউপি সদস্য আলিফ হোসেন ও ইটালী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম সহ তাদের কর্মী সমর্থকরা। এ সময় পাকুরিয়া বাজারে দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে স্থান ত্যাগ করেন হামলাকারীরা।
এবিষয়ে ইটালী ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল বারী এবং সাবেক ইউপি সদস্য ও সাবেক ১নং ওয়ার্ড আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তা লাল চক্রবর্তী বলেন, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মনোনিত প্রতীকে ভোট করার অপরাধে আ.লীগের নিবেদিত নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়তই হামলা ও মামলার শিকার হচ্ছে। গতকালও হাইবিড আ.লীগের নেতৃত্বে পাকুরিয়া বাজারে তান্ডব চালানো হয়েছে।
বর্তমান ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি পালিয়ে জীবন বাঁচিয়েছি। হামলাকারীরা বাজারে তান্ডব চালিয়েছে। তার দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করা হয়েছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য আলিফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে ইটালী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন এসে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত নন দাবি করেন।
ইটালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাটি দুঃখজনক। এ বিষয়ে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ও বর্তমান ইউপি সদস্যর মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।