সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র ৩ দিন বাকী। পূজাকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে এখন সাজসাজ রব। গত ২৫ সেপ্টেম্বর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর মহাপঞ্চমীতে দেবীর বোধন এবং ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী থেকে শুরু হবে মূল উৎসব। আর ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে দেবীর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ইতি ঘটবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক গ্রামডাক্তার মিলন কুমার ঘোষ জানান, এ বছর উপজেলার ১২ ইউনিয়নে মোট ৫২ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বিগত বছরের ন্যায় এবারও সর্বাধিক ৯ টি মন্ডপে পূজা হচ্ছে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে। এ ছাড়া কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে ২ টি, চাম্পাফুল ইউনিয়নে ৬ টি, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে ৪ টি, কুশলিয়া ইউনিয়নে ৭ টি, নলতা ইউনিয়নে ২ টি, তারালী ইউনিয়নে ৪ টি, ভাড়াশিমলা ইউনিয়নে ৩ টি, মথুরেশপুর ইউনিয়নে ৫ টি, ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে ৪ টি, রতনপুর ইউনিয়নে ৩ টি এবং মৌতলা ইউনিয়নে ৩ টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সভা করে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি অর্থসহায়তাও পাওয়া গেছে। পূজা মন্ডপসমূহে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে সরেজমিন বিভিন্ন পূজামন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি মন্ডপের সম্মুখে গেইট ও মনোরম প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। অধিকাংশ মন্দিরে প্রতিমার রঙ ও সাজসজ্জার কাজও প্রায় শেষ। এবছর মৌতলা ইউনিয়নের পরমানন্দকাটি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজার সর্ববৃহৎ আয়োজন করা হয়েছে। এখানে দেবী দুর্গাসহ মোট ১৪১ টি প্রতিমা স্থাপন করা হয়েছে। মহামারী করোনার কারণে বিগত দু’বছর পূজার আনুষ্ঠানিকতা থাকলেও আনন্দ উৎসবে ছিল ঘাটতি। এবছর করোনা পরিস্থিতি ভাল থাকায় আনন্দের মাত্রাটা তুঙ্গেই রয়েছে যার প্রমাণ পাওয়া গেছে উপজেলার প্রসিদ্ধ বস্ত্রবিপনীগুলোতে ভীড় দেখে।
দুর্গাপূজা পাঁচ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। মা দূর্গার অর্চনার পাশাপাশি একই মঞ্চে দেবী মা লক্ষী, মা সরস্বতী এবং দেবতা শ্রী গণেশ ও শ্রী কার্তিকেরও পূজা করা হয়। এ সময়টাতে ঢাকের বাদ্য আর শিউলি ফুলের মিষ্টি গন্ধে মাতোয়ারা হয় সনাতন ধর্মাবলম্বী সকল বয়সের মানুষ। দেবী দূর্গা এবার ‘গজ’-এ অর্থাৎ হাতিতে চড়ে মর্তালোকে আগমণ করবেন এবং ‘নৌকা’য় স্বর্গলোকে ফিরে যাবেন। শাস্ত্রমতে দেবীর গজ-এ আগমণের ফল শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা এবং নৌকায় গমণের ফল শস্যবৃদ্ধি ও জলবৃদ্ধি হবে বলে জানালেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি অসীত কুমার সেন।