কলারোয়ার বিভিন্ন ওষুধের দোকানে অনুমোদনহীন ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত ৬ মাসে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৫টি ওষুধের দোকানে অভিযান চালান। এর মধ্যে ১২টি দোকানেই জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অনুমোদনহীন ওষুধ ও ফুড সাপ্লিমেন্ট পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ দোকানের ওষুধ সংরক্ষণ ব্যবস্থাও স্বাস্থ্যকর নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ওষুধ প্রশাসনের সহযোগিতায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ৬মাসে কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকার ১৫টি ওষুধের দোকানে অভিযান চালান। এ সময় ওই দোকানগুলো বিভিন্ন অপরাধে জরিমানা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুবর রহমান বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মহাবিষ, শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। নকল, ভেজাল ও অনুমোদনহীন ওষুধ মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এসব ওষুধ সেবনে ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া ফুড সাপ্লিমেন্ট একটা বাণিজ্য। অনুমোদনহীন ফুড সাপ্লিমেন্ট জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। তিনি বলেন, ওষুধ সব সময় একটি তাপমাত্রার মধ্যে রাখতে হয়। ওষুধের সঙ্গে এমন কিছু রাখা উচিত নয়, যেটি ওষুধের গুণাগুণ নষ্ট করে। ওষুধ প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী কলারোয়ায় ১২০টি দোকানে ড্রাগ লাইসেন্স রয়েছে। অনেকের আবার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তা আর নতুন করে নবায়ন করা হয়নি। কিছু ওষুধের দোকান ছাড়া বৈধ বা অবৈধ প্রায় সব দোকানেই অনুমোদনহীন ফুড সাপ্লিমে›ন্ট, ফিজিশিয়ান স্যাম্পল পাওয়া যাচ্ছে। জানতে চাইলে কলারোয়া উপজেলা কেমিস্ট এ- ড্রাগিস্ট সমিতি সভাপতি ডাঃ শামসুর রহমান বলেন, কলারোয়া উপজেলায় ২২০টি দোকানের লাইসেন্সের নেই। তারা অসাধু উপায়ে ড্রাগ লাইসেন্সে না থাকলেও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর তাদের কারণে উপজেলার প্রকৃত ড্রাগ লাইসেন্সে ওষুধ ব্যবসায়ীরা নাজেহাল হতে হচ্ছে। জেলা ড্রাগ সুপার মীর আবদুর রাজ্জাক জানান-তার অভিযানের কথা জানতে পেরে সাথে সাথে ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে চলে যাচ্ছে। সাতক্ষীরা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত জানান, ১৯৪০ সালের ওষুধ নীতি ১৯৮২ সালে সংশোধিত হয়, যেখানে বলা হয়, একজন চিকিৎসক শুধুমাত্র প্রেসক্রাইব করবেন। তবে ওষুধ বিক্রি করতে পারবেন না। একজন চিকিৎসক যদি এক শিশিও ওষুধ চেম্বারে রাখেন তাহলে তাঁকে অবশ্যই ড্রাগ লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। তবে সেই নিয়ম মানেন না জেলার অধিকাংশ ফার্মেসী ব্যবসায়ী ও চিকিৎসকরা। ফলে যত্রতত্র ফার্মেসীগুলোতে রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই বিক্রি করা হয় ওষুধ। এতে করে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ রোগীরা। ওই রোগীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতেরর জন্য ফার্মেসী ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা জরুরী।