আগামী ২ নভেম্বর দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন। বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের এ উপনির্বাচনের তফসিল ইতোমধ্যে ঘোষনা করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের তফসিল প্রকাশিত হয়েছে গত ২০ সেপ্টেম্বর। প্রকাশিত পত্র অনুযায়ী আগামী ২ নভেম্বর দিঘলিয়া উপজেলার ২নং বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন।
তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে গোটা বারাকপুর ইউনিয়ন তথা দিঘলিয়া উপজেলার মানুষের মাঝে একদিকে নির্বাচনী হাওয়া, অপর দিকে মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন এখানে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি? প্রয়াত গাজী জাকির হোসেনের পরিবারের কেউ না অন্য কেউ? আর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্ব থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন বারাকপুরের যুবলীগ নেতা গাজী সগীর হোসেন পাভেল। তিনি হচ্ছেন বারাকপুরের ঐতিহ্যবাহী গাজী পরিবারের যোগ্যতম উত্তরসূরী, বারাকপুরে আওয়ামী লীগের দুর্দিনের কান্ডারী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বারবার নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত গাজী জাকির হোসেনের ভাই মরহুম গাজী জাহাঙ্গীর হোসেনের পুত্র ও সাবেক জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সর্বস্তরের গণমানুষের মুখে মুখে প্রচারিত হচ্ছে একটাই কথা সেটা হলো বারাকপুরে আওয়ামীলীগকে বিজয়ী করতে, আগামী দিনে বারাকপুরে আওয়ামী লীগের কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে হলে শহীদ পরিবারের প্রার্থী ছাড়া এ পরিস্থিতিতে বিকল্প নেই। প্রয়াত গাজী জাকির হোসেনের পুত্রের যখন বয়স কম, তাঁর স্ত্রীর বিকল্প গাজী সগীর হোসেন পাভেল ছাড়া অন্য কেউ হতে পারে না।
বারাকপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এ প্রতিবেদককে জানান, বিগত দিনে প্রার্থী নির্বাচনে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতকে উপেক্ষা করে প্রার্থী নির্বাচন করার কারণে একমাত্র বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া সকল চেয়ারম্যান প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনে প্রার্থীর ব্যাপারে জনমত যাচাইয়ের নানা প্রতিবেদন গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
সম্প্রতি খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মূর্শেদীর উপস্থিতিতে দিঘলিয়া উপজেলা যুবলীগের উদ্যোগে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এক বিশাল কর্মী সমাবেশে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেনের স্ত্রী গাজী বংশের উত্তরসূরী হিসেবে গাজী জাকির হোসেন পাভেলের হাত এমপি মহোদয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তিনি গাজী সগীর হোসেন পাভেলকে নৌকার প্রার্থী করার জন্য এমপি মহোদয়ের ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি জোর দাবী রেখেছিলেন।
এদিকে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের তালিকা তৈরির ব্যাপারে বারাকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, এ সভায় ৫ জন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা তৈরি করে খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাদের তালিকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলো (১) বারাকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী আবদুর রউফ, (২) বারাকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আবদুল ওয়াদুদ, (৩) উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোল্যা নজরুল ইসলাম, (৪) বারাকপুরের যুবলীগ নেতা ও যুবকূলের মধ্যমণি গাজী সগীর হোসেন পাভেল এবং(৫) যুবলীগ নেতা গাজী জিয়াউর রহমান। দিঘলিয়ার বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ব্যাপারে কথা হয় বারাকপুরের সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও বারাকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক গাজী মিজানুর রহমানের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বারাকপুরের আওয়ামী লীগের কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে, ইউনিয়নের শান্তিকামী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা বিধানে এবং গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গাজী সগীর হোসেন পাভেলের বিকল্প নেই।বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে নৌকার যোগ্য প্রার্থী কাকে করা হলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে এবং আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিজয় অর্জন সম্ভব হবে গণমানুষের এমন প্রশ্নের ব্যাপারে কথা হয় বারাকপুর ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী জসীমউদ্দিনের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, গাজী সগীর হোসেন পাভেল বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর যোগ্য একমাত্র পাভেল গাজী। তার বিকল্প কাউকে প্রার্থী নির্বাচন করলে সে প্রার্থীকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজয়ী করা সম্ভব নয়।
বারাকপুরের উপনির্বাচনের ব্যাপারে কথা হয় সাবেক সেনা সদস্য ও বারাকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা গাজী ফরহাদ হোসেনের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বারাকপুর আওয়ামী লীগ ও যুব সমাজের প্রাণপ্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন গাজী সগীর হোসেন পাভেল। এখানে চেয়ারম্যান প্রার্থী পাণভেলকে নৌকা প্রতীক দিলে বিজয় সহজ হবে। প্রয়াত চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেনের পরিবারের প্রতি ভোটারদের আবেগ ও অনুভুতিকে পক্ষে নিয়ে নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়া অন্য কোনো প্রার্থী দিয়ে সম্ভব নয়। বারাকপুর ৩নং আওয়ামী লীগের সহ সম্পাদক আবুল কাশেম ও বারাকপুর উত্তরপাড়া নিবাসী আমানত শেখও পাভেলকে নৌকার যোগ্য প্রার্থী হিসেবে অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
এদিকে বারাকপুর আওয়ামী লীগের তৃনমূল পর্যায়ের সকল নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের আবেগ, অনুভূতি, চাওয়া-পাওয়াকে উপেক্ষা করে প্রার্থী নির্বাচন করলে দলীয় প্রার্থীর বিজয় না হলে দলীয় নীতি নির্ধারনীমহলই এজন্য দায়ী থাকবেন এমনই অভিমত তাদের। তবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা দলীয় মনোনয়ন লাভী প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করবেন এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জয়লাভ করানোর জন্য জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এদিকে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গাজী জাকির হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ও সদ্য জামিনে কারামুক্ত শেখ আনসার আলী, বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ ইকবাল হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ কামাল বিশ্বাসের নাম শোনা গেছে।
উল্লেখ্য, বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের বারবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান, দিঘলিয়া উপজেলা আ'লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী জাকির হোসেন গত ১২ ই জুন সন্ধ্যায় চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হন গত ২ আগস্ট ঢাকা স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হামলার ৫০ দিনের মাথায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন। তার মৃত্যুতে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়। ওই শূন্য পদে আগামী ২ নভেম্বর উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।