গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দস্যু নারায়নপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নুরুল ইসলাম মোল্লার বাড়িতে বুধবার গভীর রাতে আগুন লেগে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ টিম সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও গ্রামীণ রাস্তায় প্রবেশ করতে না পারায় ততক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখা পুড়ো বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। গৃহকর্তা ঘটনাটিকে নাশকতা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম গোলাম মোর্শেদ খান, থানার ওসি এ এফ এম নাসিম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন এবং গৃহকর্তাদের শান্তনা দেন। স্থানীয় এমপি সিমিন হোসেন রিমি খবর পেয়ে মুঠোফোনে ক্ষতিগ্রস্থ গৃহকর্তার সাথে কথা বলে খোঁজখবর নেন এবং শান্তনা প্রদান করেন। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের আশ^াস দেয়া হয়।
জানা যায়, মাটির দেয়াল ঘেরা ইউ টাইপের টিনসেড বিশাল বাড়িতে গৃহকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লা তার স্ত্রী শিক্ষিকা আকতারা বেগম, এক ছেলেসহ তিন ছেলের পরিবার পরিজন রাতের খাবার খেয়ে নিজ নিজ ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত একটার দিকে হঠাৎ ওরা দেখতে পান টিনের চালে আগুন জ¦লছে। মূহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা পুড়ো বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। তালাবদ্ধ কলাপসিবল গেইট খোলে বের হতে ফায়ার সাভির্সে খবর দেন। এসময়ের মধ্যে ঘরের চাল, খাট, মালমিরা, সোকেজ, সোফাসেটসহ সমুদয় আসবাবপত্র, কাপড়-চোপড়, জরুরী প্রয়োজনীয় দলিল দস্তাবেজসহ সবকিছু পুড়ে যায়। এতে অন্ততপক্ষে ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন।
গৃহকর্তার বড়ছেলে সাইফুল ইসলাম মোল্লা জানান, রাত একটার দিকে হঠাৎ আগুনের তাপে আমরা ঘুম থেকে জেগে উঠি। কোনকিছু বুঝে উঠার আগেই পুড়ো বাড়ির টিনের চালে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মেঝো ভাই কায়কোবাদ চাকুরী সুবাদে কুয়েত প্রবাসী এবং ছোটভাই রাসেল চাকুরী সুবাদে ঢাকায় অবস্থান করছিল। এ সময় তাদের সকলের স্ত্রী সন্তানরা বাড়িতেই ঘুমিয়ে ছিলো।
গৃহকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লা জানান, গত ২০০৯ সালে প্রতিবেশীদের সাথে জায়গা-জমি সক্রান্ত একটি বিরোধের জের ধরে কে বা কারা রাতের আঁধারে দুই দফা আমাদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই সময় ঘরের সকল দরজা বাইরে থেকে আটকিয়ে দেয়া হয়। পূর্বে ঘটনার জের এবং আগুনের ধরন দেখে গৃহকর্তা এ ঘটনাটিকে নাশকতা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম গোলাম মোর্শেদ খান এবং থানার ওসি এএফএম নাসিম আগুনের ঘটনাটি তদন্ত করে উদঘাটনের চেষ্টা করবেন বলে আশ^াস প্রদান করেন।