পুঠিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনিয়ম গাফিলতির কারণে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসলে, সেবক সেবিকা কর্মচারিরা রোগী এবং স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার একাধিক অভিযোগ উঠেছে।
দেখা গেছে, পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রটি ঢাকাণ্ডরাজশাহী মহাসড়কের পার্শ্বে অবস্থিত। এটি একটি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রটি কয়েকটি উপজেলার মিলন স্থলে হওয়ার জন্য। এখানে প্রতিদিন শতশত রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। সরকারি নিয়যায়ী হাসপাতালে ২৮জন চিকিৎসক থাকার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু রোগী অনুযায়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র চিকিৎসক রয়েছে অতি সামান্য পরিমাণে। যেসব চিকিৎসকরা কর্মরত রয়েছেন, তারা দুপুর ১২টার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রর কোনো রোগী দেখছেন না। আবার কেউ কেউ কর্মরত অবস্থায় উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা যাচ্ছে। আর কাকডাকা ভোর থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের আশপাশে এবং ভেতরে অর্ধশতাধিক ওষুধ বিক্রির প্রতিনিধিরা অবস্থান করছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র রোগীদের চিকিৎসা করা অবস্থায় তাদের কক্ষে দেখা যায়। কেউ বা চিকিৎসকদের দরজার সামনে থেকে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দেখছেন। কারণ, চিকিৎসকদের প্রতি মাসে নিম্নমানের কোম্পানিগুলো মোটা অংকের টাকা দিয়ে থাকেন। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ব্যাপক সংকট রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি হওয়া একাধিক রোগী এবং রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, সেবক সেবিকা এবং চতুর্থ শ্রেনির কর্মচারিা আমাদের মানুষ মনে করে না। রোগীর সমস্যার কথা বলতে গেলে, তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের ওয়ার্ডের খাবারের মান খুবই খারাপ। তারপার, সেবক সেবিকারা সঠিক সময়ে ওষুধ দেয় না। কোনো বিষয়ে রোগীর স্বজনরা কোনো রকম প্রতিবাদ করলে, তার রোগীদের চিকিৎসা করা বন্ধ করে,অনেক কথা শুনায়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। ২৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে,পুঠিয়া সদরের এক সংবাদকর্মী তার ছোট শিশুর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। সে তার শিশুটিকে নিয়ে তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে চলে আসেন। তার সন্তানকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের শ্বাসযন্ত্র দিয়ে শ্বাস দিতে বলেন। সেবিকা লাকি খাতুন বলেন, এখন আয়া নেই, বাড়িতে গিয়েছে। আয়া আসার পর রাতে একবার শ্বাস দেওয়া হয়েছে। রাত দুইটার দিকে পুর্ণরায় শিশুটির শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তার বাবা কর্মরত সেবিকাদের শ্বাসকষ্টের ব্যাপারে বললে,সেবিকা লাকি তাকে বলেন, আপনে আমাদের ঘুম নষ্ট করলেন কেন? বারবার কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করছেন কেন, বলে কক্ষের লাইট বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েন। ওই রাতে তিনজন সেবিকা কর্মরত ছিলেন তারা হলেন, লাকি খাতুন লিলি খাতুন ও হাবিবা। সেবক সেবিকার প্রতি রাতেই ভর্তিকৃত রোগীদের এবং স্বজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ইতিহাস রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারিা জানায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের কর্মকর্তাদের অনিয়ম গাফিলতি কারণে, সেবক সেবিকা কর্মচারিা কর্মকার্তাদের কোনো রকম আদের্শ শুনেন না।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা আবদুল মতিন বলেন, রাতে আমাদের গাফিলতির কারণে, হয়তো সাধারণ মানুষরা স্বাস্থ্য সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমি অতিদ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রের সেবারমান উন্নতি করে ফেলবো। সংবাদকর্মীর সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তার সঙ্গে খুবই দুঃখজন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।