লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি উপজেলার চর আব্দুল্যাহ মাদ্রাসাতুল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) বিষয়ের সাতজন শিক্ষার্থী। উপজেলা সদর আলেকজান্ডার কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার এ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসা শিক্ষকদের ভুল তথ্যের কারণে পরীক্ষা থাকা না থাকার বিভ্রান্তিতে তারা এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়।
পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা সাত শিক্ষার্থী হচ্ছে ওই মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন, আকিব হোসেন, তাজরিন জাহান, আরমান হোসেন অনিক, রুমানা আক্তার, শরীফুল ইসলাম ও নুশরাত জাহান ইতি।
এই ঘটনায় বৃস্পতিবার রাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এক আদেশে আলেকজান্ডার কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা তৈয়ব আলীকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে তাঁকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশনের সময় তাঁরা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে কৃষি শিক্ষা এবং অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে জীববিজ্ঞান বিষয় নেন। সেই হিসেবে অতিরিক্ত বিষয়ের পরীক্ষা হবে না ধরে বিগত দুই বছরে তাঁদের জীববিজ্ঞান বিষয়ের একটি ক্লাসও হয়নি। এ ছাড়া মাদ্রাসার অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় শিক্ষকরা ওই বিষয়ের পরীক্ষাও নেয়নি। কিন্তু দাখিল পরীক্ষার প্রবেশপত্রে নয়জন শিক্ষার্থীদের ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে কৃষি শিক্ষার পরিবর্তে জীববিজ্ঞান উল্লেখ থাকে। বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জানালেও তাঁরা ওই বিষয়ের পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়ে দেয়। এজন্য শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার পরীক্ষা কেন্দ্রে যাননি। কিন্তু সকাল ১১টার দিকে আলেকজান্ডার কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে জানানো হয় তাঁদের পরীক্ষা রয়েছে। তড়িঘড়ি করে নয় শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই জন ১১টা ১৫ মিনিটের সময় কেন্দ্রে প্রবেশ করে পরীক্ষায় অংশ নেন। অপর সাত শিক্ষার্থী পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা পর কেন্দ্রে পৌঁছালে কেন্দ্র সচিব তাঁদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেননি। যে কারণে, পরীক্ষায় অংশ নিতে না পেরে তাঁরা এখন চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
আলেকজান্ডার কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের সচিব ও আলেকজান্ডার কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা তৈয়ব আলী বলেন, পরীক্ষা শুরুর পর নয় শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি দেখে আমি মাদ্রাসা শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরপর শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুইজন পরীক্ষা শুরুর ১৫মিনিট পর আসলে আমরা তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করি। অপর সাত শিক্ষার্থী পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা পর আসায় তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া যায়নি।
চর আব্দুল্যাহ মাদ্রাসাতুল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল হাকিম বলেন, প্রবেশপত্র ও সময়সূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা বিগত বিষয়গুলোর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এ ছাড়া তাদের প্রবেশপত্রে বিষয় কোডসহ উল্লেখ ছিল। শিক্ষার্থীরাই এই ভুলটি করেছে।
শুক্রবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী জানান, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে কেন্দ্র সচিব মাওলানা তৈয়ব আলীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সময় চর কলাকোপা কেরামতিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. হারুন অর রশিদকে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।