‘মহালয়া থেকে শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত পূজার সার্বিক নিরাপত্তায় সারা দেশের ন্যয় অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে রাজশাহী মহানগর ও জেলা পুলিশের সদস্যরা। পাশাপাশি পূজার চার দিন থাকবেন আনসার সদস্যরাও। আর গোয়েন্দা বাহিনীর তথ্যানুযায়ী সনাতন ধর্মালম্বীদের এই দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত রাজশাহীতে কোনো হুমকির শঙ্কা পাওয়া যায়নি। তারপরেও পূজা চলাকালীন সময় নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে অতিবাহিতের লক্ষে পুলিশের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য ইউনিটের সদস্যদেরও সজাগ দৃষ্টি থাকবে। ফলে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ঘটানোর সুযোগ নেই। এরপরেও যে কোন মাধ্যমে কেউ বিশৃঙ্খলার নূন্যতম চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবেনা।’
দুর্গাপূজার নিরাপত্তার বিষয়ে পৃথক সাক্ষাতকারে এমনটিই জানিয়েছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ডেপুটি কমিশনার (ডিসি, সদর) মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র (এসপি, এসবি) মো. ইফতে খায়ের আলম।
এরপরেও পূজা চলাকালীন সময়ে যে কোনো অনিয়ম চোখে পড়লে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরার আগে, স্থানীয় পুলিশ বা পূজা উৎযাপন কমিটি অথবা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
একই সাথে কাউকেই কোন প্রকার গুজবে কান না দেয়ারও আহবান জানিয়ে তারা বলেন, গুজবের সাথে তাল মিলিয়ে কেউ যে কোন মাধ্যমে বিশৃঙ্খলার নূন্যতম চেষ্টা করলে ছাড় দেয়া হবেনা। আর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারিদের পক্ষে কোন প্রভাবশালী ইন্ধনদাতা হলেও আইনপ্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ জিরোট্রলারেন্স নীতি অনুসরণ করেই তাদের দায়িত্ব পালন করবে। এই নির্দেশনা শুধু এই পূজা উপলক্ষেই নয়, মাদক ও জঙ্গীবাদসহ সকল সন্ত্রাসীমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধেই সরকার প্রধানের এমন নির্দেশনা রয়েছে। ফলে এগুলো কর্মকান্ডের সাথে যে ব্যক্তিই জড়িত থাকুক না কেন, পার পেয়ে যাওয়ার সুজোগ নাই।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ডেপুটি কমিশনার (ডিসি, সদর) মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব শেষ করতে ইতিমধ্যেই আরএমপি কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় পূজা উৎযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা নিজ নিজ এলাকার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। তাতে কোন প্রকার শঙ্কার বিষয় কেউ উপস্থাপন করেন নি। তারপরেও শান্তিপূর্নভাবে এই উৎসব অতিবাহিতের লক্ষে সংশ্লিষ্ট থানা ও পূজা উৎযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজশাহীর কারু শিল্পীরা। আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হবে।
জানা গেছে, এ বছর রাজশাহী মহানগরীসহ জেলার ৯ উপজেলায় ৪৫০টি পূজাম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। রাজশাহী মহানগরীতে পূজাম-প রয়েছে ৭৬টি। আর জেলার বাগমারা উপজেলায় ৮০টি, দুর্গাপুর উপজেলায় ১৭টি, বাঘায় ৪৬টি, চারঘাটে ৪০টি, তানোরে ৬০টি, গোদাগাড়ীতে ৩৯টি, পুঠিয়ায় ৫২টি, পবায় ১৮টি ও মোহনপুর উপজেলায় ২২টি পূজাম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।