প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক নির্দেশনায় বিশেষ তত্বাবধানে কালীগঞ্জের সেই অঞ্জাত মানষিক প্রতিবন্ধি পাগলীর ভ’মিষ্ট সন্তান আদুরীর জন্মদিন পালন করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার কোলা ইউনিয়নের মায়াধরপুর গ্রামে তার পালিত নানা আমজাদ হোসেনের বাড়ীতে উৎসব আমেজে জন্মদিনটি পালন করা হয়। এ সময়ে কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জামির হোসেন, সাধারন সম্পাদক সাবজাল হোসেন, সহ-সভাপতি হাবিব ওসমান, সাংবাদিক মাসুদ রানা সহ ওই পরিবারের আত্বিয়স্বজন ও প্রতিবেশি গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের বিশেষ তত্বাবধানে গত ২০২০ সালের ১লা অক্টোবর কালীগঞ্জ হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে ওই পাগলীর একটি কন্যাসন্তান জন্ম হয়। সে সময়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের দ্বায়িত্বে থাকা সরোজ কুমার নাথ ফুটফুটে চেহারার শিশুটিকে আদরের সাথে কোলে তুলে নাম দেন আদুরী। অত্যান্ত মানবিক এ বিষয়টি নিয়ে ওই সময়ে স্থানীয় সাংসদ আনোয়ারুল আজিম আনার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রানী সাহা সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিল। এবার ওই শিশু আদুরির ২য় জন্মদিন পালন করা হল।
প্রসঙ্গতঃ- কালীগঞ্জের অজ্ঞাত অন্তঃসত্ত্বা মানষিক প্রতিবন্ধিকে নিয়ে ওই সময়ে সমকাল ও সংবাদ সহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হয়েছিল। তিনি মানবিক বিষয়টি দেখভালের জন্য নির্দেশনা দিলে ঝিনাইদহ ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন পাগলীর বাচ্চাটি প্রসবের জন্য সার্বিক ব্যাবস্থা গ্রহন করেন। বাচ্চা প্রসবের পর পরবর্তীতে ওই পাগলীকে নিজ বাড়িতে আশ্রয়দানকারী উপজেলার ময়ধরপুর গ্রামের দিনমজুর আমজাদ -ছাকিরন দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছিল। সে সময়ে শিশুটির লালন পালনের জন্য ওই পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা এবং প্রতিবন্ধি মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য যাবতীয় ব্যয় সরকারী ভাবে বহন করা হবে বলে আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে ওই দরিদ্র পরিবারের সচ্ছলতার জন্য একটি বাড়ি ও ভ্যানগাড়ী কিনে দেওয়া হয়।
শিশুটির পালিত নানা আমজাদ হোসেন জানান, আনুমানিক ২২/২৩ বছরের পরিচয়হীন এক মানষিক প্রতিবন্ধি অন্তসত্বা মহিলা কোলাবাজারে ঘোরাফেরা করতেন। কখনও ময়লা কাপড় চোপড় শরীরে জড়িয়ে আবার কখনও অর্ধলঙ্গ অবস্থায় থেকে মুখে বিড় বিড় করে কী যেন বলতেন। পাগলীটির বাচ্চা ভ’মিষ্টের কিছুদিন আগে তার বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে অসুস্থ অবস্থায় পড়েছিলেন। বিবেকের তাড়নায় তিনি তাকে নিজ বাড়ীতে আশ্রয় দেন। পরে তিনি ও গ্রামের বেশ কয়েকজনকে নিয়ে পাগলীকে কালীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সে সময়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগী দেখে জানান মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। এরপর বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে পেরে পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশ করেন। সেই খবর প্রধানমন্ত্রীর নজরে পড়াই অঞ্জাত মেয়েটির প্রসবের সার্বিক ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন। এখন তার বয়স দুই বছর পূর্ণ হয়েছে। তারা নিজ সন্তানের মতই পালিত আদুরির জন্ম উৎসব পালন করছেন।