ব্লাড ক্যান্সার এক ধরনের রক্তের ক্যান্সার, যা রক্তের শ্বেতকণিকা, লোহিতকণিকা বা অণুচক্রিকা থেকে উৎপন্ন হয়। ব্লাড ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরন। ব্লাড ক্যান্সারের সূচনা হয় অস্থিমজ্জা বা ইমিউন সিস্টেমের অভ্যন্তরের টিস্যুতে। ব্লাড ক্যান্সার হলে অস্বাভাবিক রক্তকোষ সংখ্যায় বাড়তে থাকে। এরা ঠিকমতো কাজ করে না এবং সুস্থ রক্তকোষকে কাজ করতে দেয় না বলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
লক্ষণ
* কফ আর বুকে ব্যথা
* বারবার সংক্রমণ
* জ্বর
* শীত শীত ভাব
* র্যাশ, কালশিটে, রক্তক্ষরণ
* ত্বকে চুলকানি
* ক্ষুধামান্দ্য
* বমির ভাব
* রাতে ঘাম
* দুর্বলতা
* ক্লান্তি
* ফ্যাকাসে ত্বক
ধরন
ক্যান্সারের উৎসস্থল ভেদে বিভিন্ন ধরনের ব্লাড ক্যান্সার হয়ে থাকে।
প্রতিটির থাকে আলাদা উপসর্গ।
লিউকেমিয়া
শ্বেতকণিকা আমাদের দেহে সংক্রমণ রোধের কাজ করে। লিউকেমিয়া হলো শ্বেতকণিকার ক্যান্সার। অস্থিমজ্জা তৈরি করে অস্বাভাবিক শ্বেতকণিকা। সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে।
একিউট : রোগ খুব দ্রুত অগ্রসর, বাচ্চাদের বেশি হয়।
ক্রনিক : ধীরে শুরু হয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়। বয়স্কদের বেশি হয়।
রোগীকে কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, টার্গেট থেরাপি, স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
লিম্ফোমা
এই ক্যান্সার উদ্ভূত হয় দেহের ইমিউন সিস্টেম, লিম্ফেটিক সিস্টেম থেকে। তরুণ আর বেশি বয়স্কদের হয়। লিম্ফোমা ক্যান্সার সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। হজকিন লিম্ফোমা ও নন হজকিন লিম্ফোমা।
লক্ষণ
* শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায় যেমন গলা, বগল, কুচকি
* কফ, শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তি
* জ্বর
* দ্রুত ছড়ায়
উৎপত্তিস্থল, লিম্ফোমার ধরন এবং রোগের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে লিম্ফোমার চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মাল্টিপল মায়েলোমা
প্লাজমা সেল থেকে মাল্টিপল মায়েলোমা ক্যান্সারের সূচনা হয়। প্লাজমা সেল তৈরি করে অ্যান্টিবডি এবং দেহের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। প্লাজমা সেল অস্বাভাবিক বাড়লে হয় মায়েলোমা সেল। এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না। এসব সেল দেহের নানা হাড়ে ছড়ালে একে বলে মাল্টিপল মায়েলোমা।
লক্ষণ
* কোমরের পেছনে, পাঁজরে তীব্র ব্যথা
* সহজেই হাড় ভেঙে যাওয়া
* জ্বর, বারবার ভাইরাসের সংক্রমণ
* ক্লান্তি
* কালশিটে দাগ
স্বাভাবিকভাবে নিয়ম মেনে চললেও মাল্টিপল মায়েলোমা ক্যান্সার হতে পারে। আগে শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। সহজে লক্ষণও প্রকাশ পায় না। বিজ্ঞানীরা এর ওষুধ আনতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
(অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ)