চারুকারু শিক্ষার বাতিঘর হিসাবে কেশবপুর চারুপীঠ আর্ট স্কুল পরিচিত। যশোরের কেশবপুরে চারুপীঠ আট স্কুল নামের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়েছিলো ২০১৩ সালে। সাংস্কৃতিক কর্মী উৎপল দে নিজ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। মাত্র ১২ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ছোট এক ভাড়া ঘরে এর কার্যক্রম শুরু হয়। ছোট্ট ছোট্ট সোনামনি দের রঙিন তুলির আঁচড়ে যেন আলোকিত হয়ে উঠল ছোট্ট সেই ঘরটা। সেই আলোর প্রভা আজ কেশবপুরকে আলোকিত করে চলেছে। বর্তমানে ৬টি শাখায় প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার সকাল- বিকাল প্রায় তিনশত ২৮ জন শিক্ষার্থী এ প্রতিষ্ঠানে অংকন শিখছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আছে ৬ জন। চারুকারুর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি সেবামূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। শীতবস্ত্র বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, বিনামূল্য অক্রিজেন পরিসেবা, বৃক্ষরোপন কর্মসূচী, হনুমানদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ সহ নানা মানবিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রয়েছে। চারুকারু পাশাপাশি ২০২৩ সালে থেকে যুক্ত হচ্ছে সুন্দর হাতের লেখা ,কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্যু বিভাগ।
৪ বছর মেয়াদি চারুকারু কোর্স শেষে শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া প্রতিবছর ১২ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি, চিত্রাংকন উৎসব, পহেলা বৈশাখ পালন সহ নানা অনুষ্ঠান করে আসছে।। ক্ষুদে শিক্ষাার্থী আহনাফ, শুচি, আদিত্য জানান স্যাররা খুবই আদর করে আমাদের হাতে ধরে ছবি আকানো শেখায়। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চারুকারুতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি আরেফিন সিদ্দিক নিকট হতে সন্মননা ক্রেস্ট, খুলনা বঙ্গকথা সামাজিক সংগঠন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, খেলাঘর আসর, কালভেরী ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ, ডাক্তার হাসনাত ফাউন্ডেশন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এমএসডবলু, বাংলাদেশ দলিত ম›ঞ সন্মাননা প্রদান করেন। শিক্ষার্থী নুজহাত রোদেলা, পৌলমী সরকার তুলি ও উদীপ্ত পাল বলেন চিত্রাংকনের পাঠদান, ব্যবহারিক থেকে শুরুকরে সার্বিক বিষয় খোঁজ খবর রাখেন স্যাররা। এ ছাড়া কাগজ কেটে নকশা, আলপনা ,মুখোশ তৈরী .মাটির উপকরণ তৈরী, জল রং শিখি।এই ব্যাপারে কথা হয় চারুপীঠের অভিভাবক কেশবপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক জেসমিন নাহারের সাথে, তিনি বলেন- আমার সন্তান আবরার জাহান হৃদ্যর হাতে খড়ি এখানে। সে পেনসিল ধরতে পারতো না। এখানে সে পেনসিল ধরা, ছবি আঁকা শিখেছে। শিক্ষকরা অত্যান্ত যত্ন সহকারে ছবি আঁকা শেখায়। চারুপীঠ আর্ট স্কুলের সভাপতি মদন সাহা অপু বলেন বলেন সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাবে অনেকদুর। ফলে আমাদের প্রজন্ম আর্ট শেখার পাশাপাশি জাতীয় দিবসগুলোসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারণা পাবে। কেশবপুরে চারুপীঠ আট স্কুলের পরিচালক উৎপল দে সাথে কথা হলে তিনি বলেন শিক্ষার্থীদের আধুনিক মানসন্মত চারুকারু শিক্ষায় বিকাশিত করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলি। সরকারি বা বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মডেল হিসেবে রূপ নিবে এই স্কুল।
কেশবপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক সহকারি অধ্যাপক মশিউর রহমান বলেন, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কেশবপুরের চারুপীঠ প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণ যোগ্যতা পেয়েছে। শিশু থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরাও প্রতিষ্ঠানটিতে আঁকা শিখছে। প্রতিষ্ঠানটি এ ধারা অব্যাহত রাখুক এই কামনাই করি।