জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও শিক্ষা অফিসারসহ ৭জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে জামালপুরের বিজ্ঞ আদালত। একটি চিরস্থায়ী নিষেধজ্ঞা মামলার বিবাদী হিসেবে ২৩ নভেম্বর বিজ্ঞ আদালত তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবের সময় সীমা দেওয়া হয়েছে ৭ দিন। মামলার বাদী বকশীগঞ্জ উপজেলার পাখীমারা গ্রামের রবিউল আলমসহ ১১জন।
জামালপুরের বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে দায়েরকৃত মোকদ্দমা সূত্রে জানা যায়, মামলারবাদী জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার পাখীমারা গ্রামের রবিউল আলমসহ ১১জন বাদী বকশীগঞ্জের চরকাউরিয়া মৌজার বিআরএস এর ১৬৬৮নং খতিয়ানের বিআরএস ৩০৭২ নং দাগের ২৩ শতক জমির মালিক। কিন্তু বিবাদীরা উল্লিখিত জমিতে জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মান করার উদ্যোগ নেন। বাদীরা ভবন নির্মানে নিষেধ করলে বিবাদীরা প্রকাশ্যে বাদীদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে ভবন নির্মানের উদ্যোগ নেন।
এই ঘটনায় রবিউল আলমসহ ১১জন বাদী জামালপুরের বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৫২৫/২২।
মামলায় বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লিটা আক্তার লিজা, প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বিনা বেগম, শিক্ষক নার্গিস আক্তার ও খোকন মিয়াকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলা মোকাবেলা বিবাদী জামালপুরের জেলা শিক্ষা অফিসার, শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মহা পরিচালক, একই মন্ত্রনালয়ের বিদ্যালয় পরির্দশক ও চেয়ারম্যান।
উল্লেখিত মোকদ্দমা দায়েরের পর বিজ্ঞ আদালত বাদীগণের দায়েরকৃত বক্তব্য পর্যালোচনা করে বিবাদীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন।
এব্যাপারে মামলার বাদীগণের পক্ষে রবিউল আলম জানান, উল্লিখিত জমি আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। কাগজমূলে ওয়ারিশ সূত্রে আমরা ওই জমির মালিক। সরকারের প্রয়োজন হলে জমি অধিগ্রহণ করতে পারেন। আমরাও নাগরিক হিসেবে সরকারের প্রয়োজনে দিতে বাধ্য। কিন্তু জোর করে নেওয়ার সুযোগ নেই। তাই আমরা আদালতে গিয়েছি। আদালত বিবাদীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্তই আমরা চুড়ান্ত হিসেবে মেনে নিবো। স্কুল কর্তৃপক্ষ আদালতে মালিকানার কাগজপত্র দেখাতে পারলে আমরা জমির মালিকানা দাবি করবো না।
জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লিটা আক্তার লিজা জানান, ১৯৪৩ সাল থেকে ওই জমিতে স্কুল ভবন ছিলো। এখনও আছে। পুরাতন ভবন ভেঙে নতুন ভবন করা হচ্ছে। স্কুলের জমিতেই নতুন ভবন হচ্ছে। কারও জমি জবর দখল করা হয়নি।
এব্যাপারে জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল আউয়াল জানান, ১৯৪৩ সালে জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। এরপর থেকেই উল্লিখিত ভূমিতে স্কুলের যাবতীয় কার্যক্রম চলে আসছে। কাগজপত্র না থাকলেও দখলীয় সূত্রে জমির মালিক জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রাথামিক শিক্ষা অফিসার রশিদা বেগম জানান, প্রধান শিক্ষককে জমির মালিকানার কাগজপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। দলিলপত্র পেলেই সব কিছু পরিস্কার হবে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান না হলে উন্নয়ন কাজের বিঘœ ঘটবে। তাই আমরা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুন মুন জাহান লিজা জানান, জিগাতলা পাখিমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর মামলার বাদীরা কাজে বাধা দেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শণ শেষে স্কুলের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে জমির মালিকদের সাথে আলোচনা করেই পুরাতন ভবনের স্থানেই নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কিন্তু এখন মামলা দিয়ে সরকারি কাজে বাধা দিয়ে আসছে। বিষয়টি দীর্ঘ সময় চলমান থাকলে নতুন ভবন নির্মানে বিঘœ ঘটবে। তিনি আরও জানান, জমির বিষয়ে এলাকার গণ্যমান্য লোকজন জানিয়েছেন, স্কুলের নামে মৌখিকভাবে জমি দেওয়া হয়ে ছিলো। কিন্তু দলিল করে দিতে পারেনি জমির পূর্ব দাতা