ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মোগড়া গ্রামে শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ থাকায় তিনঘন্টা পর্যন্ত মরদেহ পড়ে থাকে। রাস্তা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে একপক্ষের টিনের বেড়া খুলে মরদেহ শ্মশাণে নেওয়া হয়। তবে রাস্তা নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। এ নিয়ে হিন্দু সম্প্র দায়ের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।
রোববার গভীর রাতে মোগড়া গ্রামের সুধীর পাল (৮৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেলে মরদেহ নিয়ে আসার পর রাস্তা বন্ধ দেখতে পেয়ে লোকজন অপেক্ষা করতে থাকে। সকাল আটটা থেকে লোকজন মরদেহ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। খবর পেয়ে উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসেন। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। ছুটে আসে থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, সুধীর পাল মারা গেলে সকাল আটটার দিকে মরদেহ নিয়ে মোগড়া কালীতলা শ্মশাণে যান। এ সময় দেখতে পান শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তাটি একদিকে টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আরেকদিক অন্য পক্ষ দখল করে রেখছে। যে কারণে রাস্তা বন্ধ করে থাকায় শ্মশাণে যাওয়াসহ আরো ২৫টি পরিবার সমস্যায় আছেন।তারা জানান, জায়গা নিয়ে আলমগীর ও শামীম নামে দুই ব্যক্তির মধ্যে বিরোধ চলমান। তারা শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তা দখল করে নেন। শামীম শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তায় টিনের বেড়া দিয়ে দেন। অন্যদিকে আলমগীর ঘর তুলে রাখাসহ গাছ লাগিয়ে জায়গা দখলে রাখেন। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে শামীম বেড়া সরিয়ে নেন। বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত বেড়া না দিতে বলা হলেও তিনি সেটা মানেননি। অন্যদিকে রায় অনুযায়ী আলমগীরকে রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়তে বলা হয়। তিনিও সেটা না করে জায়গা দখলে রাখেন ও আদালতে মামলা করে দেন। সোমবার ওই রাস্তা দিয়ে মরদেহ নিতে না পারলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। অনেক আলাপ আলোচনার পর শামীমের পক্ষ বেড়া খুলে দিলে তার বাড়ির উপর দিয়ে মরদেহ নেওয়া হয়। রাস্তা ঘেষে আলমগীরের গাছ থাকায় ও রাস্তায় গর্ত থাকার সেখান দিয়ে লাশ নেওয়া যায়নি।
শিউলী আক্তার নামে এক নারী জানান, সকাল থেকে মরদেহ নিয়ে বসে থাকে হিন্দুসম্প্রদায়ের লোকজন। এরপর পুলিশ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এসে পরিস্থতি স্বাভাবিক করেন। রাস্তা বন্ধ থাকায় আমাদের মতো ২৫টি পরিবার বন্দি অবস্থায় আছে বলে জানান তিনি।
মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মতিন জানান, আমরা সালিসের রায় দিয়েছি। আলমগীরের পক্ষ রায় মানেনি। মরদেহ নিয়ে বসে থাকার কথা আমাকে জানানো হলে শামীমকে বলি বেড়া খুলে দিতে। বিষয়টি সাময়িক মীমাংসা করা হয়েছে।
আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বেড়া খুলে মরদেহ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপাতত সেখানে কোনো সমস্যা নেই।