বন্ধুর হবু স্ত্রীকে বাসায় ডেকে নিয়ে গণধর্ষণ করে মোবাইলে ভিডিও ধারণের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসা শিক্ষক ও কলেজে পড়-য়া এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার বিকেলে নগরীর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার জাকির হোসেন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামীদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এয়ারপোর্ট থানার ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর মামলা গ্রহন করে রোববার দিবাগত রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হল, নগরীর রূপাতলী উকিল বাড়ি সড়কের জামিয়া কাসিমিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক আবিদ হাসান ওরফে রাজু, বাবুগঞ্জ উপজেলার গাঙ্গুলি বাড়ি মোড় এলাকার বাইতুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম আবু সাইম হাওলাদার এবং সরকারী ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের ছাত্র হৃদয় ফকির।
পুলিশ জানিয়েছে, তিনজন বর্তমানে তিন এলাকার বাসিন্দা হলেও তারা আগে একই বাসায় ভাড়া থাকতেন। সেই সূত্রে পরিচয় এবং ঘটনার সময়ে তারা পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করে একই বাসায় মিলিত হয়ে অপরাধ সংগঠিত করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তিনি এয়ারপোর্ট থানার পাংশা এলাকার একটি দাখিল মাদ্রাসা থেকে সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার সাথে একই এলাকার মাহপুজুর রহমান সায়মনের প্রেমের সর্ম্পকে পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়। বিষয়টি সায়মনের বন্ধু আবিদ হাসান, সাইম এবং হৃদয় ফকির জানতো। চলতি বছরের ২০ আগস্ট রাতে হৃদয় ফকির ওই ছাত্রীর মোবাইলে কল করে জানায়, সায়মনের সাথে বিয়ের কথা ঠিক হলেও সে অন্য নারীর সাথে মেলামেশা করেন। বিষয়টি প্রথমে বিশ্বাস করেনি সায়মনের হবু স্ত্রী। পরে অপর দুই বন্ধু বললে বিশ্বাস করে। এ সময় সায়মনের বন্ধুরা জানায় ২৭ আগস্ট বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শের-ই-বাংলা সড়ক ডাঃ হামিদ লেনের হৃদয় ফকিরের ভাড়া বাসায় সায়মন অন্য মেয়ে নিয়ে আসবে। হাতেনাতে ধরার জন্য ওই ছাত্রীকে হবু স্বামীর বন্ধুর বাসায় যাওয়ার জন্য বলে। কথামত ওই ছাত্রী সকাল ১০টার দিকে গেলে সেখানে আটকে তাকে তিনজনেই পালাক্রমে ধর্ষণ করে মোবাইলে ভিডিও ধারন করে রাখে।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনার পর ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পরলে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এতে বাধ্য হয়ে কোথাও চিকিৎসা না নিয়ে নির্যাতিতা বাড়ি ফিরে আসে। এরপর ধর্ষণের ভিডিওর কথা বলে ওই ছাত্রীকে ব্লাকমেইল করে উল্লিখিত তিনজনে পাঁচবার সেই বাসায় নিয়ে দলবেধে ধর্ষণ করে। পরে ভিডিও ভাইরাল করে দেয়ার হুমকি দিয়ে টাকা দাবী করলে তা দিতে অস্বীকার করে ছাত্রী। একপর্যায়ে অভিযুক্তরা তাদের ধর্ষণের ভিডিও হবু বর সায়সমনের বাবাকে দেখায়। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হলে হবু স্বামীর সহায়তায় রোববার (২৭ নভেম্বর) রাতে থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতা ছাত্রী। এরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে।