রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দীনের বিরুদ্ধে দখলদারি ও জলসাঘরের সমালোচনা করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় মোহনপুর উপজেলা কৃষক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মোসা. শেখ হাবিবাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন, মোহনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম, এমপির সাবেক এপিএস একরামুল হক বিজয়সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনকে অভিযুক্ত করে রোববার রাতে মোহনপুর থানায় হত্যার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন শেখ হাবিবা।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন, সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিন (৪৫), মোহনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম (৫৫), এমপির সাবেক এপিএস মো. একরামুল হক বিজয় (৪২), ড্রাইভার মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৭), মোছা. ডলি বেগম (৩৬), মোহনপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালামের পিএস মো. হুমায়ূন কবির (৩০), মো. জুয়েল রানা (২২), মোসা.ডলি আক্তার (২৮)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য মো. আয়েন উদ্দিনের বিভিন্ন কুকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় শত্রুতার জের ধরে অভিযুক্তরা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে গত বুধবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে মোহনপুর উপজেলা চত্তরে এমপি মো. আয়েন উদ্দিন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালামের হুকুমে একরামুল হক বিজয় লোহার হাতুড়ী দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে শেখ হাবিবার মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম ও শ্লীলতাহানি
করে। মোছা. ডলি বেগম হাবিবার বুকে উঠিয়া ওড়না দিয়া গলা চেপে ধরিয়া হত্যার চেষ্টা করতে থাকে এবং ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ডলি আক্তার মোবাইল ফোন এবং গলায় থাকা ৭০ হাজার টাকা মূল্যের এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেন চুরি করে নেয়। অজ্ঞাতনামারাসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা এলাপাতাড়ীভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল ঘুষি মারে এবং চুলের মুঠি ধরিয়া রাস্তা দিয়া
ছেঁচড়াইয়া পেটাতে পেটাতে মোহনপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আটকে রাখে। পরে মোহনপুর থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। ওইদিন মোহনপুর উপজেলা পরিষদের হলরুমে মাসিক মিটিং ছিল। মিটিংগে স্থানীয় সংসদ,উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নির্বাহী অফিসার, পুলিশ প্রশাসন,কেশরহাট পৌরসভার মেয়র, ছয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাবিবা বলেন, প্রথম দফা আমাকে এমপির এপিএস একরামুল হক বিজয় পেটানোর পর উপজেলা পরিষদের হলরুমের সামনে বিচারের দাবিতে অনশনে বসি। ভেবেছিলাম মিটিং থেকে বের হয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ প্রশাসন আমার কথা শুনে সঠিক পদক্ষেপ নিবেন। কিন্তু মিটিং শেষে ঘটনা ঘটলো উল্টো। আমার কথা না শুনে আবারও আমাকে তাদের লোকজন দিয়ে পেটাতে পেটাতে মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ মোহনপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে আমাকে উদ্ধার করেন।
এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ওই দিন উপজেলা সমন্বয় সভা ছিল। ওই সভায় আমি যোগ দেই। সভা চলাকালে ওই নারীর সঙ্গে মহিলা লীগ নেত্রী ডলি বেগমের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই নারী ডলি বেগমের উপর হামলা করে এবং তাকে মেরে জখম করে। এ সময় একরামুলসহ অন্যরা তাদের ছাড়াতে যায়। এ সময় ওই নারী একরামুলকে কামড়ে জখম করে। এ নিয়ে ডলি বেগম তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছে। সেই মামলা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ দিয়েছে।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম বাদশাহ বলেন, ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।