বিদ্যালয়ে আয়া ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগে প্রধানশিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের বিস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল এবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।
মঙ্গলবার দুপুরে বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান সিকদার অভিযোগ করে বলেন, স্কুলের আয়া ও অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আমার বোন শাহনাজ আক্তার আয়া পদের জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে আমার বোন শাহনাজকে চাকরি দেয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে মোট সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়েছে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মামুন ফকির ও প্রধানশিক্ষক আবু ইউসুফ। এরমধ্যে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মামুন ফকিরের হাতে দেয়া হয়েছে তিন লাখ এবং প্রধানশিক্ষক নিয়েছেন পঞ্চাশ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, ২৬ নভেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা শেষে জানতে পারি আমাদের চেয়ে অন্য এক প্রার্থীর কাছ থেকে বেশি টাকা নিয়ে তাকে পরীক্ষায় প্রথম বানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিলে ২৮ নভেম্বর তিন লাখ টাকা ফেরত দেয় মামুন। পরবর্তীতে একইদিন প্রধানশিক্ষকও পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে।
শাহনাজ আক্তারের পিতা এনায়েত হোসেন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, জমি বিক্রি করে মেয়ের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছি। আমার মেয়ে ঢাকায় গার্মেন্টেসে চাকরি করতো। প্রধানশিক্ষক আমাকে বলেছেন, আপনার মেয়েরতো চাকরি হয়ে গেছে। তাকে রিজেন দিয়ে আসতে বলেন। এখন স্কুলের চাকরিটাও হলোনা। আর গার্মেন্টেসের চাকরিটাও হারাতে হয়েছে।
বিএম কলেজে অনার্স পড়-য়া ছাত্র নাজমুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, অফিস সহায়ক পদের পরীক্ষা দিয়েছি। পরীক্ষায় ২০ নম্বরের মধ্যে ১৭ নম্বর পেয়েছি। অথচ অষ্টম শ্রেনী পাশ করা আলামিন নামের একজনকে বেশি নম্বর দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের লোকজন পরীক্ষার খাতা চেক করলেই আল-আমিন নামের ওই প্রার্থীকে বেশি নম্বর দেয়ার রহস্য বেড়িয়ে আসবে।
তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে প্রার্থীদের অভিযোগ সঠিক নয় দাবী করেছেন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মামুন ফকির ও প্রধানশিক্ষক আবু ইউসুফ। উজিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবিএম জাহিদ হোসেন বলেন, আয়া পদে নিয়োগ দেয়ার জন্য এক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে নির্দেশ দিয়েছি।