ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতেই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এসএসসির ফলাফলকে সার্বিকভাবে ইতিবাচক বললেও বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার কারণে পাশ করা শিক্ষার্থীদের শিখনফলে যে ঘাটতি রয়ে গেছে তা পুষিয়ে নিতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
করোনা ও বন্যার কারণে নির্ধারিত সময়ের বেশ পরে অনুষ্ঠিত হয় এবছরের এসএসসি পরীক্ষা। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া এবারের পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গেল বারের চেয়ে পাশের হার কমেছে। কিন্তু ৬৮ ভাগ বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।
এবার শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ২ হাজার ৫১৯টি। আর শতভাগ অকৃতকার্য হওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩২ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০টি। গেল বারের চেয়ে এবার পাশের হার কমলেও এবারের ফলাফল সন্তোষজনক বলছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার বলেন, ‘২০১৯-২০তে শতাকরা পাশের হার ৮০-৮৫ এর মধ্যে থাকত। সেই তুলনায় আমাদের এবার পাশের হার ৮৭.৪৪ শতাংশ চলে এসেছে।’
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ফলাফল যাই হোক, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় শিখনফলে ঘাটতি থেকে যাবে পাশ করা শিক্ষার্থীদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম বলেন, ‘আমাদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষাটা নেবার কারণে যে অসুবিধাটা হয়েছে সেটা হল শিখনফলে ঘাটতি রয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের। এটি কিন্তু একটা ভিত্তিমূলক পর্যায়। এখন এই ভিত্তিটা দুর্বল থাকার কারণে এর প্রভাব কিন্তু কর্মজীবনও পর্যন্ত থাকবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডও শিক্ষাবিদদের এ শঙ্কার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছে না।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘করোনাকালীন আমাদের বেশ একটা বড় শিখন ঘাটতি হয়েছে। যদিও অনলাইন এবং এ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে এটা পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এটা পর্যাপ্ত ছিল না।’
শিক্ষার্থীদের শিখনফলের এ ঘাটতি পোষাতে উচ্চমাধ্যমিকে ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ শিক্ষাবিদদের। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যাদের ফল ভালো হয়নি তারা ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবেন ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।