বগুড়ার সারিয়কান্দিতে বংশ পরমপরায় চলছে চুন তৈরীর শিল্প। আগে সদর ইউনিয়নের অন্তার পাড়ায় ১৩ টি পরিবার খাওয়ার চুন তৈরী করার গ্রামীণ ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের আওতায় চুন তৈরী করা হলেও যমুনা নদীর ভাঙ্গনের কারণে এখন ৩ টি পরিবার ঘরে বসেই এই চুন তৈরী করছেন। পৌর এলাকার কলোনি পাড়ায়। এই চুন তৈরীতে বছরে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার চুন কেনা-বেচা করে থাকেন তারা। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
জনা যায়, সারিয়াকান্দির অন্তার পাড়ায় ছিল ২৫ টি পরিবার। তাদের কাজ চলতো সকাল থেকে শুরু করে মধ্যে রাত পর্যন্ত পান পিপাসুদের জন্য বংশ পরম পরায় এ কাজ। ৩০ বছর আগেও ছিল ২৫ টি পরিবার একাজে ব্যস্ত থাকলেও এখন সে রমরমা ভাব আর নেই। নদী ভাঙ্গনের কারণে অন্তার পাড়া গ্রামটি বিলীন হওয়ার পর ওই পরিবার গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে যান বিভিন্ন অঞ্চলে। আবার এই শিল্পে তেমন একটা আয় না থাকায় অনেকেই পেষা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেষায় যুক্ত হয়েছে। তবে এখনো ৩ টি পরিবার সারিয়াকন্দি পৌর এলাকার কলোনি পাড়া নামক গ্রামে এসেও বংশ পরমপরায় এই শিল্প ছাড়তে পারেননি। এই তিনটি পরিবার হলেন সুদেপ দেবনাথ (৬২), নিরঞ্জন দেবনাথ (৩৫) ও লিটন দেবনাথ। বাব-দাদা ১৪ পুরুষের এ শিল্পর সাথে যুক্ত থেকে দৈনিক ১ থেকে দেড় মণ চুন তৈরী করেন বাড়ির একেক জন। এতে তাদের প্রতি জনের মাসে ব্যবসা হয়ে থাকে প্রায় ১৪ হাজার টাকা। এ হিসেবে তাদের একেক জন ব্যবসা করে থাকেন বছরে ১ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। এ শিল্পের সাথে যুক্ত ওই ৩ জন বছরে ব্যবসা করে থাকেন প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। এ পরিমাণ টাকা ব্যবসা হলেও তাদের খরচ হওয়ায় লাভ তেমর একটা থাকেনা। সুদেব দেবনাথ বলেন, স্থানীয় নদী থেকে চাছা ঝিনুক সংগ্রহ করতে হয়। নিজেরা সংগ্রহ করতে না পারলে প্রতি ৫০ কেজি ওজনের বস্তা কিনতে হয় ২০০ টাকায়। এই পরিমাণ ঝিনুক থেকে তৈরী হয় প্রায় ৪ মণ চুন। ঘরে ছোট আকারে শ্যলো মেশিন বসিয়ে তার সাথে বিশেষ কায়দায় একটি গোলকার আকৃতির হলারের মধ্যে চাছা ঝিনুক দিয়ে তৈরী করা হয় এই মিহি চুন। শ্যলো মেশিনের খরচ
ছাড়াও অনান্য খরচ তো আছেই। খাটুনি হিসেবে লাভ তেমন একটা থাকেনা আমদের। এজন্য অনেকেই এ পেষা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেষায় যুক্ত হয়েছেন। এই শিল্পের মালিক, ছাড়াও উৎপাদক ও বিক্রি নিজেরাই করে থাকি। হাটে বাজারে বিক্রি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে চুন কিনে থাকেন। এই চুন পান খানেওয়ালাদের কাছে খুবই প্রিয়। যার জন্য এখনও রয়েছে বাজারে এই চুনের চাহিদা। তবে কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় না কারো কাছ থেকে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, এ ধরনের চুন তৈরি করে থাকেন তা আমার জানা আছে। তবে তারা যোগাযোগ করলে আমরা তাদের ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের আওতায় সহযোগিতা করতে পারব।