‘আন্তস্কুল, আন্তকলেজ, আন্তবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগীতার মাধ্যমে আমাদের ছেলে মেয়েরা আরও বিকশিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চূড়ান্ত উৎকর্ষ অর্জন করে বিশ্বকাপে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হবে’। গত ২৩ নভেম্বর বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসরের সমাপনী ও পদক বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। রাজধানীর বাংলাদেশ আমি স্টেডিয়ামে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ১২৫ টি সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ হাজার ৮৫০ নারী সহ প্রায় ৬ হাজার ৯৫০ অংশ গ্রহণকারীকে নিয়ে এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার তৃতীয় সংস্করণের আয়োজন করে। ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিক্স, ভলিবল, বাস্কেট বল, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, কাবাডি ও দাবা সহ ১২টি ইভেন্টের অধিক সেরা পারফর্মারদের মধ্যে ৭২০টি পদক বিতরণ করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতা আমাদের যুব সমাজকে পথ দেখায়। শিশু বা কিশোর বয়স থেকে যত বেশি খেলাধুলা, করবে তত বেশি মন বড় হবে, শরীর ভালো থাকবে। তাছাড়া আমি মনে করি, এই চ্যাম্পিয়ান শীপের জন্য একের সাথে অপরের যে প্রতিযোগিতা, সেটাই যুব সমাজ ও ছেলেমেয়েদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করবে। নিজেদেরও আত্মশুদ্ধি হবে এবং তারা সুন্দর ভাবে বাঁচবো’। প্রধানমন্ত্রীর কথা গুলো যথার্থই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে শিশু কিশোরদের খেলাধুলার জন্য যথেষ্ট মাঠ নেই। তারা স্বচ্ছন্দে খেলতে পারার মতো পরিবেশও নেই। এমন বাস্তবতার মাঝে ভালো খেলোয়াড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাছাড়া প্রতিযোগিতা খেলোয়াড়দের পরিশুদ্ধ করলেও উপজেলা, জেলা বা জাতীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতার আয়োজনও দেখা যায় না। এত কিছুর পরও বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে শত বাধা বিপত্তি এড়িয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ অবদান রাখছে। যা সবাইকে আশান্বিত করছে।
দেশের মাটিতে ফুটবল নিয়ে আগে যে উত্তেজনা ছিল সংশ্লিষ্টদের মাঝে, তা ক্রিকেট আসার পর স্তিমিত হয়ে গেছে। অবশ্য বাংলাদেশের নারী ফুটবল-দল এত প্রতিকুলতার মাঝেও সাফ চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করেছে। ক্রিকেটে অর্জন না থাকলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে আমাদের ছেলেরা খেলছে। অলিম্পিক প্রতিযোগিতা সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়ও এদেশের ছেলে মেয়েরা অংশ নিচ্ছে। মাঝে মধ্যে সোনা, রুপা, ব্রজ জয়ের খবরও দিচ্ছে। আজ খেলা শুধু খেলা নয় ,খেলা আজ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক হয়ে উঠেছ। দেশের সুনাম বৃদ্ধিতে যা খুবই সহায়ক। কাজেই বাংলাদেশ যে বিশ্বকাপ ফুটবলে অংশ নিতে পারবে না। তা ভাবা অমূলক।
এখন কাতার বিশ্বকাপ চলছে। সারা দেশের বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমর্থকরা সে দেশের পতাকা বাসা বাড়িতে ওড়াচ্ছে। ফুটবল উন্মাদনায় ভাসছে সারাবিশ্ব। বাংলাদেশেও এর ঢেউ লেগেছে। কাজেই বাংলাদেশের টিম বিশ্বকাপে থাকলে এ উন্মাদনা আরো বাড়বে। আমরা চাই বাংলাদেশ ফুটবল দলের বিশ্ব কাপে অংশ গ্রহণ। ফলাফল যাই হোক। কাজই প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আশাবাদকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সেদিন বেশি দুরে নয়, বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।